বিয়েতে বর্তমানে উপযুক্ত পাত্র-পাত্রী খুজেঁ পাওয়া কতটা কঠিন?

বিয়েতে বর্তমানে উপযুক্ত পাত্র-পাত্রী খুজেঁ পাওয়া কতটা কঠিন?

বর্তমান সময়টি চলছে উপযুক্ততা প্রশ্নোত্তরের খোঁজে। কেউবা রয়েছেন জীবন সুন্দরভাবে সাজানো-গোছানোর চিন্তায় আর কেউবা নিজের অগোছালো জীবন রাঙাতে উপযুক্ত পাত্র-পাত্রী সন্ধানে।

তবে সহজ-কঠিন শব্দ দুটির এপিঠ-ওপিঠ সহজ-গরল সবই বুঝালেও এর মর্মকথা হয়তো সবাই আঁচ করতে পারেন বটে।

বিয়েতে বর্তমানে উপযুক্ত পাত্র-পাত্রী খুজেঁ পাওয়া কতটা কঠিন?

সামাজিকভাবে সংসারের সূচনা কেবল বিয়ের মাধ্যমে। আর এ কাজে যেমন উপযুক্ত পাওয়া সহজ হলেও দ্বীনদার পাওয়া কঠিন। আবার বিপরীত দিকে নৌকাবিহীন নদী পার হওয়ার মতো কঠিন। এক্ষেত্রে মনে উঁকি দিতেই পরে উপযুক্ত পাত্র-পাত্রীর সংজ্ঞা কি?

দেশে তো ছেলে-মেয়ের অভাব নেই। তা জানা গেলেও উপযুক্ততার সন্ধানে সবাই চাকরিজীবী ছাড়া কেউ এখন আর কোনো ছেলের কাছে মেয়ে বিয়ে দিতে চায় না। এদিকটায় মেয়ে পক্ষের সবাই কঠোর প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

এক্ষেত্রে অনেকের ধারণা মতে বর্তমানে মেয়েদের জন্য বিয়ে কঠিন হওয়ার অন্যতম কারণগুলো—

পারিবারিকভাবে, সামাজিকভাবে, রাষ্ট্রীয়ভাবে বাল্য বিবাহ বন্ধ করে বিয়ের উপযুক্ত বয়সটাকে প্রাধান্য দিয়ে পড়ালেখার পিছনে ব্যয় করার প্রবণতা, যুহুদের অভাবকে কুফুর নাম দিয়ে বিয়ে কঠিন করে বিয়ের উপযুক্ত বয়স নষ্ট করা, উচ্চশিক্ষা ও ভবিষ্যত্ ক্যারিয়ারের চিন্তায় বিয়ের উপযুক্ত বয়স শেষ করা, বেদ্বীন পরিবারের দ্বীনি পাত্রের ব্যাপারে অনাগ্রহ।

আবার বর্তমান প্রেক্ষাপটে সৌন্দর্যহীন মেয়েদের বিয়ে কঠিন হয়ে উঠেছে উপযুক্ততার বেড়াজালে। যুবকদের মধ্যে বেকারত্বের হতাশা বিয়ে থেকে দূরে রাখছে।

সবার মনে গেঁথে রয়েছে যে, চাকরিজীবী ছাড়া কোনো বেকার ছেলের উপযুক্ততা ম্লান। বর্তমানে প্রতিষ্ঠিত ছেলেদের বিয়ের বাজারে প্রচুর চাহিদা রয়েছে। বেকার জীবন মানে চরম পরাজয় মানেন অনেকে।

কিন্তু বিয়ের ক্ষেত্রে যোগ্যতা সম্পন্নদের কদর বহুগুণ বেড়ে যায় তা দিবালোকের মতোই পরিষ্কার। বাড়তি যোগ্যতার মোহে অনেকে প্রতারণারও আশ্রয় নেন। যা আপত দৃষ্টিতে লোভনীয় করে তুললেও শেষটার সমাপ্তি করুণ হয়।

ইসলাম ধর্মমতে বিয়ের ক্ষেত্রে যোগ্যতার প্রেক্ষাপট পরিষ্কার ও সুস্পষ্ট। এতে প্রতিয়মাত হয় যে, দারিদ্র্য শব্দটা বিয়ে জন্য কোনো বাধা নয়। আল্লাহ বলেন, “তোমাদের মধ্যে যারা বিবাহহীন আছে, তাদের বিবাহ সম্পাদন করে দাও। তারা যদি নিঃস্ব হয়, তবে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে স্বচ্ছল করে দিবেন।”
—নূর ২৪/৩২

রাসূল (সাঃ) বলেন, “তিন ব্যক্তিকে সাহায্য করা আল্লাহ স্বীয় কর্তব্য হিসাবে নির্ধারণ করেছেন, তাদের একজন হলো, বিবাহে ইচ্ছুক ব্যক্তি যে বিবাহের মাধ্যমে পবিত্র জীবন যাপন করতে চায়।”
—তিরমিযী হা/১৬৫৫ প্রভৃতি; মিশকাত হা/৩০৮৯

উক্ত প্রেক্ষাপট নিয়ে অনেকে করেছেন মন্তব্য। একজন বলেছেন, ‘পরিবারের চাহিদা হচ্ছে দুনিয়াদার অর্থশালী, সরকারি চাকরিজীবী৷ বিয়ে হবেটা কিভাবে?’

আরেকজন তুলন করেছেন এই বলে যে, ‘মরু অঞ্চলে একটা রিং খুঁজে পাবার সমতুল্য।’

অনেক মন্তব্যের মধ্যে আরেকজনের মন্তব্য ছিলো এমন, ‘নিজে যদি পবিত্র থাকেন, নিজের চরিত্রকে পবিত্র রাখেন ইন-শাহ-আল্লাহ সব দিক থেকে ভালো একজন মেয়ে পাবেন।’

আবার আরেক লিখেছেন, ‘যে উপযুক্ত তার কিন্তু টাকা নাই। এই জন্য সে অনেকের কাছে উপযুক্ত নয়। যদি মধ্যবিত্তের ঘরে যান পাবেন, কিন্তু আজ কাল কেউ যায় না।’

হাজারো ভিড়ে বর্তমান প্রেক্ষাপটে উপযুক্ত পাত্র/পাত্রী পাওয়াটা ধরে নেয়া হয় দুনিয়ার সবচেয়ে কঠিন কাজ। আল্লাহ তাআলা সবাইকে ঈমানদার, ভালো জীবনসঙ্গী/জীবনসঙ্গিনী দান করুক। (আমিন) 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন