গর্ভবতী মায়ের যত্ন ও পরামর্শ। | গর্ভবতী নারীর খাবার তালিকা।

গর্ভবতী নারীর খাবার তালিকা কেমন হওয়া উচিত?

গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা কেমন হওয়া উচিত তা নিচে আলোচনা করা হলো-

০১। গর্ভবর্তী নারী সবসময় গুরুপাক খাদ্য বর্জন করবে এবং বাসী, পঁচা ও গন্ধ খাবার খাবে না। শুধু লঘুপাক পুষ্টিকর খাদ্য খাবে। গর্ভাবস্থায় নারীদের পক্ষে যেকোনো প্রকারের গোস্ত কম খাওয়া উচিত।

০২। গর্ভাবস্থায় নারীদের ক্যালসিয়ামের অভাব বেশী হয়ে থাকে। অথচ তা খুবই প্রয়োজন। এজন্য গর্ভবর্তীকে নিজের ও পেটের বাচ্চার স্বাস্থ্য বজায় রাখতে ক্যালসিয়ামযুক্ত খাদ্য বেশী পরিমাণে খেতে হবে।

যেমন- দুধ, কলা, মাছ, ঘি, মাখন, বিভিন্ন প্রকারের ফল ও শাকসবজি ইত্যাদি। এসবের মাঝে যথেষ্ট পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও আয়রণ রয়েছে।

গর্ভবতী মায়ের যত্ন ও পরামর্শ। গর্ভবতী নারীর পোশাক।

গর্ভবতী মায়ের যত্ন ও পরামর্শ। গর্ভবতী নারীর পোশাক।

০১। গর্ভবতীকে গর্ভাবস্থায় পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন কাপড় ও পোষাক পরিধান করতে হবে। অপরিস্কার ময়লা ও দুর্গন্ধযুক্ত পোষাক ব্যবহার করবে না। রীতিমত পরনের কাপড়, পেটিকোট, ব্লাউজ ইত্যাদি সাবান দিয়ে পরিস্কার করে ধুয়ে নিবে।

০২। গর্ভবতীর ঘুমানোর ও বসার স্থান পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। বিছানার তোষক, বালিশ ইত্যাদি নরম হতে হবে।

সেখানে আলো বাতাসের যথেষ্ট ব্যবস্থা থাকতে হবে। এই সব বিষয়ের প্রতি গর্ভবতীর দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তির বিশেষ দৃষ্টি রাখতে হবে।

০৩। গর্ভবতী মেয়েলোক সবসময় পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন ও পাক-পবিত্র থাকতে চেষ্টা করবে। পাঁচ ওয়াক্ত নামায আদায়ের প্রতি যত্নবান হবে। ধর্মীয় পুস্তকাদি ও কুরআন পাঠে মগ্ন হবে। এতে গর্ভের সন্তান নেককার ও সৎ স্বভাবের হবে।

০৪। শাড়ী কাপড় অথবা সেলোয়ার কোমরের সাথে বেশী খিচিয়ে পরিধান করবে না। কোলের অন্য শিশু বাচ্চাকে পেটের উপর নিয়ে শয়ন করবে না।

০৫। কোনো প্রকার ভারী বোঝা টানবে না বা কাজ করবে না। যেমন ঢেকিতে চাল তৈরী করা, পানি ভর্তি কলসী কাখে নিয়ে আসা, কুপ হতে ভারী বালতি দ্বারা পানি তোলা ইত্যাদি।

কিন্তু অলস হয়ে বসেও থাকবে না। তাতে শরীর ও স্বাস্থ্য খারাপ হয়। সময় সময় ছোট ছোট কাজ কর্ম করবে এবং আস্তে আস্তে আলো বাতাসে হাঁটা-চলা করবে। এটা স্বাস্থ্যের পক্ষে খুবই উপকারী।

০৬। যেখানে বেশী লোকজনের সমাগম সেখানে যাবে না। যেমন- বিবাহ বা অন্য কোনো ভোজের অনুষ্ঠান, সিনেমা দেখতে বা নাচ-গানের আসরে যাবে না।

০৭। ভয় কিংবা আতঙ্কময় স্থানে বসবাস করবে না। দুরবর্তী কোনো স্থানে হেঁটে যাবে না। বেশি ঝাকি লাগে এমন কোনো যানবাহনে উঠবে না। পেশাব পায়খানার বেগ বেশি সময় আটকে রাখবে না। সময় হলেই বাথরুমে গিয়ে হাযত পুরা করবে।

০৮। কবরস্থান ও শ্মশানের নিকটের রাস্তা দিয়ে কখনো যাতায়াত করবে না। কোনো প্রকার ছোঁয়াচে ও সংক্রামক রোগীর কাছে যাবে না।

০৯। গর্ভবতী মহিলা কখনো ঝগড়া বিবাদে জড়াবে না। কারো প্রতি হিংসা বিদ্বেষও রাখবে না। সর্বদা রাগ গোস্সা পরিহার করে চলবে। এই আচার আচরণ গর্ভের সন্তানের ভিতরে প্রবর্তিত হতে পারে। অতএব তা বর্জনীয়।

১০। যে সকল দৃশ্য দেখলে অন্তরে ভয় হয় বা ঘৃণা বা বিরক্তির উদ্ভব হয়, তা দেখবে না বা তার নিকট কখনো যাবে না। কেননা, এটাও গর্ভের সন্তানের উপর প্রবর্তিত হতে পারে।

১১। গর্ভবতী মহিলা দিনের বেলা বেশী ঘুমাবে না। তাতে শরীরে অলসতা এসে থাকে এবং তা পেটের সন্তানের ভিতরেও দেখা দিতে পারে।

১২। গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত স্বামী সহবাস করবে না। তাতে গর্ভপাত হবারভসম্ভাবনা থাকে এবং পেটের বাচ্চা অনেক ক্ষেত্রে দুর্বল, বিকলাঙ্গ ও লজ্জাহীন হয়ে থাকে। গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত চিন্তা-ভাবনা করবে না। তাতে পেটের সন্তান বোকা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

১৩। গর্ভবতী মহিলা বেশি ঝাল খাবার খাবে না। এতে পরবর্তীতে সন্তানের চর্মরোগ হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। তদ্রুপভাবে অতিরিক্ত মিষ্টি জাতীয় দ্রব্যও খাবে না। তাতেও সন্তান বোবা হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।

উৎস-

বই: নারী ও পুরুষের একান্ত গোপনীয় কথা বা পুশিদাহ রাজ।

লেখক: মুফতী হাকীম আল্লামা আশরাফ আমরহী।

Post a Comment

Previous Post Next Post