স্বামী-স্ত্রীর সহবাসের উপকারিতা।
(ক) মিলনের দ্বারা ঈমান মজবুত হয়ে থাকে এবং ইবাদতের দিকে মন ঝুকে থাকে। অন্তরের ভিতর বাজে কোনো কু-চিন্তা বা কু-কাজের ধারণা উদয় হয় না।
(খ) নিয়মিতভাবে সহবাস করলে দেহ, মন সুস্থ্য থাকে, সাংসারিক কাজ কর্মে আনন্দ এবং স্বাস্থ্যেরও উন্নতি হয়।
(গ) স্বামী-স্ত্রীর সহবাসের দ্বারা মন মস্তিষ্ক সদা সর্বদা প্রফুল্ল থাকে। ঈমানী শক্তি সুদৃঢ় হয় এবং অনাবিল আনন্দ লাভ করে।
(ঘ) স্বামী-স্ত্রীর রতিক্রিয়ায় মন মানসিকতা শান্ত ও সংযত থাকে। উশৃঙ্খলতা বা চরিত্রহীনতার নাগ পাশ হতে দূরে থেকে সৎকার্যের দিকে ধাবিত হয়।
(ঙ) ইসলামী শরীয়ত অনুযায়ী যদি স্বামী-স্ত্রী সহবাস করে, তবে তা আল্লাহ্ তাআলার দেয়া অফুরন্ত নেয়ামতের তুল্য হয়।
এটা বেহেশতের ভিতরের অনাস্বাদিত নেয়ামতের তুল্য। এ কথা মনে করে সহবাস করলে উভয়ের অন্তর এক অনাকাঙ্খিত আনন্দে ভরে ওঠে।
(চ) প্রধান উপকার এই যে, আল্লাহ মহান উদ্দেশ্য মানব বংশ বৃদ্ধি হয় এবং এই নিয়মে স্বামী-স্ত্রী সহবাস করলে তাদের সমস্ত জিন্দেগীর যৌন মিলনকে ইবাদতের মধ্যে গণ্য করা হয় এবং কাল কিয়ামতে মুক্তির পথ প্রশস্ত হবে।
মাত্রাতিরিক্ত সহবাসের অপকারিতা।
স্বামী-স্ত্রীর মিলনে যেমন প্রভূত উপকার রয়েছে। তেমনি উহাতে মারাত্মক ক্ষতিরও আশংকা আছে।
যেকোনো কাজ কর্মের সীমা লঙ্ঘণ যেমন ভালো নয়, তদ্রুপ স্বামী-স্ত্রীর দাম্পত্য জীবনে মাত্রাতিরিক্ত সহবাস করলে উপকারের চেয়ে অপকার বেশী হয়ে থাকে। যেমন-
(ক) পুরুষের অধিক পরিমাণে বীর্যপাতের ফলে শরীর ও স্বাস্থ্য দুর্বল হয়। এক্ষেত্রে ডাক্তারী চিকিৎসা গ্রহণ করবে।
(খ) অতিরিক্ত সহবাসে যৌন-পিপাসা আস্তে আস্তে লোপ পায়।
(গ) গাল ভেঙ্গে যায়, চক্ষু কোঠারাগত হয়। ধীরে ধীরে ধাতু দুর্বল্য দেখা দেয়। এমনকি ধ্বজভঙ্গ রোগ হতে পারে। এই ক্ষেত্রে পূর্বেই সতর্ক হয়ে চিকিৎসা করতে হবে।
(ঘ) অতিমাত্রায় সহবাসে নারীদের যৌবন ও সৌন্দর্য হারিয়ে যায় এবং দেহ ভেঙ্গে যায়। শেষ পর্যন্ত প্রদর রোগ দেখা দেয়।
এই ক্ষেত্রেও সাবধানতা অবলম্বন করে মাত্রা কমিয়ে ফেলবে। প্রয়োজন হলে চিকিৎসা করাবে।
(ঙ) নারীদের রক্তহীনতার কারণে শরীর ফ্যাকাসে হয়ে যায়, চেহারার লাবণ্যতা এবং নমনীয়তা কমে যায়।
সুতরাং সহবাসের মাত্রা কমিয়ে নিয়মতান্ত্রিক পন্থায় যৌন সুখ লাভ করলে কোনো ক্ষতির আশংকা থাকে না।
অধৈর্য হয়ে অতি মাত্রায় সহবাস হতে পূর্বেই সাবধানতা অবলম্বন করবে। এতদ্বিষয়ে পূর্বে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। সে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
উৎস-
বই: নারী ও পুরুষের একান্ত গোপনীয় কথা বা পুশিদাহ রাজ।
লেখক: মুফতী হাকীম আল্লামা আশরাফ আমরহী।