কোন সময় সহবাস করা উচিত আর কোন সময় অনুচিত?

কোন সময় সহবাস করা উচিত? (সহবাসের উপযুক্ত সময়)

স্বামী-স্ত্রীর জন্য কখন, কোন সময়ে সহবাস করা উচিত সে বিষয়ে জানা থাকা দরকার। অবশ্য যৌনবিদদের কথায় অনেকেরই অমিল পাওয়া যায়।

কেউ বলেন রাতের শেষ ভাগে সহবাস আনন্দদায়ক। আবার কেউ বলেন, রাতের প্রথম ভাগে সহবাস করা তৃপ্তিদায়ক। তবে এই কথা সকলের মনে রাখা উচিত যে, ভরা পেটে স্ত্রী সহবাস করা ঠিক নয়।

তাতে রোগ-ব্যাধির সম্ভাবনা থাকে । খাওয়ার পরে অন্তত দুই ঘণ্টার ভিতরে সহবাস করা ঠিক হবে না।

স্ত্রীলোকের ঋতুস্রাব হতে পাক পবিত্র হওয়ার পরে ১৪/১৫ দিন পর্যন্ত সহবাসের প্রবল বাসনা থাকে। ঐ সময়ের সহবাসে গর্ভ সঞ্চার হয়ে থাকে।

বেশীরভাগ লোকের ধারণা, শেষ রাতে নারীদের কাম-বাসনা প্রবল থাকে এবং ঐ সময়ের সহবাসে স্বামী-স্ত্রী বেশী আনন্দ ও তৃপ্তি পেয়ে থাকে।

দিনের বেলা সহবাস না করে রাতে সহবাস করা উচিত। যেহেতু রাতের অন্ধকারে মনের মতো সাধ মিটাতে পারা যায় এবং ঐ সময়ের সহবাসে প্রায়ই ছেলে সন্তান জন্মে থাকে।

যে অবস্থায় সহবাস করা অনুচিত। (কোন সময় সহবাস করা উচিত নয়?)

০১. মহিলাদের মাসিক বা ঋতুস্রাব অবস্থায় ।

০২. নিফাস (অর্থাৎ মহিলাদের বাচ্চা প্রসবের পর চল্লিশ দিন বা এর কমে যে কয়দিনে রক্ত আসা পরিপূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে যায়) অবস্থায়।

এ দু'সময়ের মধ্যে সহবাস করলে উভয়েই অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার প্রবল আশঙ্কা রয়েছে। কেননা, এ সময়ের রক্তের প্রচুর পরিমাণ বিষাক্ত জীবানু থাকে।

যার দ্বারা ভয়ানক রোগ হওয়ার সম্ভবনা প্রমাণিত। অনেক পুরষকে দেখা যে, এ সময় সহবাস করার কারণে লজ্জাস্থানে এলার্জী জাতীয় বিভিন্ন রোগ হয়। 

কোন সময় সহবাস করা উচিত নয়?

লজ্জাস্থানে জ্বালাপোড়া শুরু হয়ে যায়, আবার কারো ধাতু দুর্বলতা দেখা দেয়। এ সময়ের সহবাস দ্বারা সন্তান জন্ম নিলে অনেক ক্ষেত্রে সন্তানের শরীরে বিভিন্ন রোগ হয়ে থাকে।

শরীরে বিভিন্ন ধরনের ঘা হয়, যা থেকে অনবরত পানি ঝরতেই থাকে। এ সময়ের সহবাসে অনেক মহিলার মাসিকের রক্ত সহজে বন্ধ হয় না।

সময় সময় রক্ত ঝরতেই থাকে এবং বাচ্চাদানী বাহিরে বের হয়ে আসে। আবার অনেক সময় মহিলাদের ভ্রুণ নষ্টের রোগ হয়ে থাকে। সাথে সাথে বাচ্চাদানীও দুর্বল হয়ে যায়।

এছাড়াও এসময়ের সহবাসে নারী-পুরুষ উভয়েই বিভিন্ন ধরণের রোগ-ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়। কেননা ঋতুস্রাব ও নেফাসের রক্তে শরীরের ভিতরের রোগ জীবানুযুক্ত অপবিত্র উপকরণ থাকে।

সে সাথে বিষাক্ত জীবাণুও থাকে। রক্ত স্রাবের সময় মহিলাদের সর্বক্ষণ রক্ত নির্গত হওয়ার কারণে কারো কারো যৌনাঙ্গটি এক প্রকার ফোলা ও উষ্ণ থাকে।

ঋতুস্রাব বা নেফাস থেকে পবিত্র হয়ে গোসল করার আগ পর্যন্ত মাহিলাদের সাথে সহবাস করবেন না।

০৩. কাজের ব্যস্ততা বেশি থাকলে সে সময় সহবাস না করা।

০৪. চিন্তা-ভাবনা, পেরেশানী ও বিচলিত থাকলে সহবাস না করা।

০৫. দুর্বল ও ক্লান্ত অবস্থায় সহবাস না করা।

০৬. মাতাল অবস্থায় সহবাস না করা।

০৭. পেশাব-পায়খানার চাপ থাকলে সহবাস না করা।

০৮. একেবারে খালি পেটে অথবা ভরাপেটেও সহবাস না করা। এ অবস্থায় সহবাসে পেটের বিভিন্ন রোগ সৃষ্টি হওয়ার প্রবল আশঙ্কা থাকে।

এমনকি পাকস্থলী কলিজার উপর চলে আসারও সম্ভবনা রয়েছে।

বিজ্ঞদের মতে ভরাপেটে সহবাস করলে শার (অর্থাৎ পেশাবের সাথে পুঁজ পড়া এবং শরীর খুবই দুর্বল হয়ে যাওয়া) রোগ হয়ে থাকে আবার একেবারে খালি পেটে সহবাস করা শরীরের জন্য আরও ক্ষতিকর।

কেননা বীর্যপাতের পর অণ্ডকোষ নিজের খাদ্য চর্বি থেকে তলব করে থাকে। আর চর্বি নিজের খাবার তলব করে কলিজা থেকে। কলিজা তার খাবার তলব করে পাকস্থলী থেকে।

ক্ষুধার্ত অবস্থার পেট থাকে একেবারে খাবার শূন্য। যার কারণে টিবি, ভীতিপ্রদ রোগ, চোখের দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা থাকে।

০৯. অসুস্থতা থেকে মুক্তির পর শারীরিক দুর্বলতা এখনো অবশিষ্ট আছে এ অবস্থায় সহবাস না করা। মৃগ রোগ, টিবি রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি সহবাস থেকে দুরে থাকবে।

১০. মস্তিষ্ক ক্ষয় হয় এমন কাজের পর সহবাস না করা। যাদের চোখের দৃষ্টির রোগ, শারীরিক দুর্বলতা ও কলিজা, পাকস্থলী দুর্বল, তাদের জন্যও সহবাস করা ক্ষতিকর। তদ্রুপভাবে অর্শ্ব ও যৌনরোগে আক্রান্ত ব্যক্তি সহবাস থেকে যথাসম্ভব দূরে থাকবে।

১১. যাদের গনোরিয়া রোগ রয়েছে, তারাও সহবাস থেকে যথাসম্ভব দুরে থাকবে।

১২. অসুস্থ অবস্থায় ও জীবাণুযুক্ত বাতাস প্রবাহের সময় সহবাস না করা উচিত। জ্ঞানী ব্যক্তিদের ধারণা মতে চাঁদের এগারো তারিখে সহবাস করা নিজের বয়স কমিয়ে ফেলারই নামান্তর।

তারা আরো বলেন, চাঁদের প্রথম রাত, মধ্য রাত এবং শেষ রাত অর্থাৎ মাসের শেষ দিনের রাতে সহবাস করবে না।

প্রাপ্ত বয়সের পূর্বে ভ্রুণ তৈরী হলে সে সন্তান অসুস্থ অবস্থায় জন্ম গ্রহণ করে। বৈজ্ঞানিদের মতে রাত্রে প্রথমাংশে সহবাসের দ্বারা সন্তান জন্ম গ্রহণ করলে সেসব সন্তান অল্প বয়সে মৃত্যুবরণ করে।

আর রাতের শেষ প্রহরে সহবাস করার দ্বারা সন্তান জন্মগ্রহণ করলে সন্তান সুস্থ সবল ও ধর্মভীরু হয়ে থাকে।

উৎস-

বই: নারী ও পুরুষের একান্ত গোপনীয় কথা বা পুশিদাহ রাজ।

লেখক: মুফতী হাকীম আল্লামা আশরাফ আমরহী।

Post a Comment

Previous Post Next Post