সহবাস করার ইসলামিক নিয়ম। | ইসলামিক পদ্ধতিতে সহবাস করার নিয়ম।

সহবাস করার ইসলামিক নিয়ম।

প্রত্যেক বিবাহিত ছেলে-মেয়েদের সহবাস সম্পর্কে জ্ঞান রাখা জরুরী। যে দম্পত্তি এ সম্পর্কে জ্ঞান রাখে না, তাদের সহবাস ও জীব-জন্তুর সহবাসের মাঝে কোনো পার্থক্য নেই বলে জ্ঞাণীরা মনে করেন।

জীব-জন্তুর সহবাসের ক্ষেত্রে যেমন কোনো নিয়ম-নীতি নেই, তদ্রুপভাবে যেসব লোকেরা এ বিষয়ে জ্ঞান রাখে না তারা সহবাসের ক্ষেত্রে কোনো নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা করে না।

সহবাস করার ইসলামিক নিয়ম। | ইসলামিক পদ্ধতিতে সহবাস করার নিয়ম।

বরং যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে সহবাস করে থাকে। এজন্য প্রথমে সহবাসের নিয়ম-নীতি নিয়ে আলোচনা করা হচ্ছে, যা উপকারী ও প্রয়োজনীয়। 

যেন এ বিষয়ে জানতে ইচ্ছুক ব্যক্তিরা জ্ঞানার্জন করতে পারে। সহবাস সম্পর্কে পরিপূর্ণ গঠনমূলক আলোচনা তানহায়ীকা সবক নামক কিতাবে আলোচনা করা হয়েছে।

সহবাসের নীতিমালা। (ইসলামিক পদ্ধতিতে সহবাস করার নিয়ম)

দিবা-রাত্রী সব সময় সহবাস করা যাবে। এতে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। তবে দিনের পরিবর্তে রাতে সহবাস করাই উত্তম।

যে রাতে সহবাস করার ইচ্ছা জাগবে দিনের বেলাই স্ত্রীর সাথে সে বিষয়ে আলোচনা করে রাখা উত্তম। যাতে স্বামীর জন্য স্ত্রী সেজেগুজে থাকতে পারে এবং নিজের গুপ্তাঙ্গ পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করতে পারে।

সাথে সাথে স্ত্রীরও সহবাসের প্রতি আগ্রহ জাগে। এতে স্বামীর উদ্দীপনার সাথে সাথে স্ত্রীর উদ্দীপনাও পূর্ণ হবে। যেমন, স্বামীর বীর্যপাতের আগ মুহূর্তে স্ত্রীকে জানালে স্ত্রীও তার চাহিদা স্বামীর সাথে সাথে পূর্ণ করবে।

কেননা, বীর্যপাত অন্তর ও মস্তিষ্কের ধারণা থেকে উদ্দীপনার সাথে তরান্বিত হয়। আর যে রাতে সহবাস করবে সে দিন কিছুক্ষণ বিশ্রাম করে নিবে। যাতে রাতে ঘুমের ব্যাঘাত হলেও শারীরিক কোনো ক্ষতি না হয়।

সহবাস করার স্থান। (সহবাস করার ইসলামিক পদ্ধতি)

সহবাস করার জন্য নির্ধারিত কোনো স্থান নেই। সব জাগায় সহবাস করা যাবে, তবে গোপন ও নির্জন স্থানে সহবাস করা উত্তম।

ছাদবিশিষ্ট ঘরে এবং যেসব স্থানে লোকজনের বা বাচ্চাদের যাতায়াত নেই এমন স্থানে সহবাস করবে। সহবাসের সময় ঘরে বা বিছানায় এমন কোনো বাচ্চা রাখা ঠিক নয়, যারা সহবাস বিষয়ে জ্ঞান রাখে বা এ বিষয়ে তারাও স্বাদ ও আনন্দ পায়।

তবে কোনো বাচ্চা যদি ঘুমন্ত অবস্থায় থাকে তাহলে সহবাসে কোনো সমস্যা নেই। যে ঘরে সহবাস করা হবে যে ঘরে যেন কোনো জীব-জন্তুও না থাকে। 

মোটকথা, সহবাসের জন্য নির্জন স্থান নির্বাচন করবে। খেয়াল রাখবে, যেন কোনো অবস্থাতেই পায়ু পথে অর্থাৎ পেছনের রাস্তা দিয়ে সহবাস ভুলক্রমেও না হয়।

হাদীসে এ রাস্তা দিয়ে সহবাস করার ব্যাপারে কঠোর নিষেধাজ্ঞা এসেছে।

সহবাসের সময় যে পোষাক পরিধান করতে হয়

সহবাস যেকোনো ভাবেই করা যায়। শরীরে কোনো কাপড় থাকুক বা না থাকুক এ জাতীয় কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। তবে একেবারে উলঙ্গ হয়ে সহবাস করাটা দেখতে অসুন্দর।

কেননা, একেবারে উলঙ্গ হয়ে সহবাসকারীদের সন্তান অনেক ক্ষেত্রে নির্লজ্জ হয়ে থাকে। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনো একেবারে উলঙ্গ হয়ে সহবাস করেন নি।

বরং সহবাসের সময় মাথার উপর কাপড় রাখতেন এবং সে সময় যত কথা বলতেন, সবই নিচু আওয়াজে বলতেন। আর স্ত্রীদেরকে বলতেন, তোমরা শান্তভাবে থাক।

উশৃঙ্খল ও নড়াচড়া করতে নিষেধ করতেন। সহবাসের সময় পোষাক সম্পর্কে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, তোমরা স্বামী-স্ত্রী যখন সহবাস করবে, তখন গাধার ন্যায় একেবারে উলঙ্গ হয়ে সহবাস করো না। 

বর্ণিত আছে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সহবাসের সময় নিজেকে এবং স্ত্রীদেরকে কোনো না কোনো কাপড় দ্বারা আবৃত করে নিতেন।

সহবাসের মুহূর্তে মূল্যবান কথা। (ইসলামে সহবাসের নিয়ম pdf)

সহবাসের সময় নিজেকে ভীত মনে করবে না এবং ভয়ও পাবে না।

তাহলে সন্তানাদিও ভীতু জন্ম নিবে। সহবাসের সময় আপন স্ত্রী ব্যতিত কারো ছবি মনে কল্পনা করবে না। সহবাসের সময় অন্য মহিলাকে স্মরণ করে সহবাস করলে আপন স্ত্রীর সাথে সহবাস করেও পাপি হতে হবে।

এ সময় নিজের স্ত্রীকেই কল্পনা করবে। সহবাসের সময় কথাবার্তা যতো কম বলা যায়, ততই ভালো। সহবাসের সময় অধিক কথাবার্তা বললে, সন্তানাদি অধিকাংশ ক্ষেত্রে তুতলা ও বোবা হয়ে থাকে।

পশ্চিম দিক মুখ করে সহবাস করবে না। এমন করা আদবের খেলাফ। অনেকে সহবাসের সময় স্ত্রীর লজ্জাস্থান দেখে থাকে। এটি খুবই খারাপ। কেননা, এর দ্বারা চোখের দৃষ্টিশক্তি কমে যায়।

কখনও আত্মভোলা রোগ হওয়ার সম্ভাবনাও থাকে। সহবাসের সময় ধর্মীয় কোনো কিতাবাদি সামনে থাকলে, সেগুলোকে কোনো কিছু দ্বারা আবৃতি করে রাখবে।

সহবাসের সময় কালো অসুন্দর ও কুশ্রী কারো ব্যাপারে বা সন্তানের চিন্তা করবে না। এতে জন্মগ্রহণকারী সন্তান কালো অসুন্দর ও কুশ্রী হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এসম্পর্কে তানহায়ী কি সবক' নামক কিতাবে বিশদভাবে আলোচনা করা হয়েছে।

উৎস-

বই: নারী ও পুরুষের একান্ত গোপনীয় কথা বা পুশিদাহ রাজ।

লেখক: মুফতী হাকীম আল্লামা আশরাফ আমরহী।

Post a Comment

Previous Post Next Post