মুসলমানরা কেন এতো পশু হত্যা করে?

প্রশ্ন: পশুহত্যা নিঃসন্দেহে অত্যন্ত নিষ্ঠুর কাজ। তাহলে মুসলমানরা কেন এতো পশু হত্যা করে, আমিষ খাদ্য গ্রহণ করে?

ডা. জাকির নায়েকের উত্তর: 'নিরামিষবাদ' বিশ্বব্যাপী বর্তমানে একটা আন্দোলনে রূপ নিয়েছে। অনেকেই এটাকে যুক্ত করেছে 'পশু অধিকারের' সাথে।

সন্দেহ নেই অনেকেই মনে করেন মাংস ভক্ষণ এবং অন্যান্য উৎপাদিত আমিষ দ্রব্যসামগ্রী 'পশু অধিকার' কে হরণ করে।

মুসলমানরা কেন এতো পশু হত্যা করে?

ইসলাম নির্দেশ করে সকল সৃষ্ট জীবের প্রতি অনুকম্পার নীতি গ্রহন করতে। একই সাথে ইসলাম এ বিশ্বাসও লালন করে যে, এ পৃথিবীর সমস্ত উদ্ভিদ ও পশুপাখি এবং জলজপ্রাণী সৃষ্টি করা হয়েছে মানুষের কল্যাণে।

তাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এসব সম্পদ ভারসাম্যপূর্ণ ও ন্যায়সঙ্গতভাবে ব্যবহার করা এবং আল্লাহর এই নেয়ামত ও আমানতসমূহের যথাযথ সংরক্ষণ করা।

এ বিতর্কের সম্ভাব্য আরো কিছু দিক পর্যালোচনা করে নেওয়া যাক।

ক. একজন মুসলিম সম্পূর্ণ নিরামিষভোজী হওয়াও সম্ভব।

একজন মুসলিম সম্পূর্ণ নিরামিষভোজী হয়েও খাঁটি মুসলিম থাকতে পারেন। এটা বাদ্যতামূলক কিছু নয় যে, একজন মুসলিমকে আমিষ খাদ্য খেতেই হবে।

খ. কুরআন মুসলমানদেরকে আমিষ খাবারের অনুমতি দিয়েছে।

মুসলমানদের পথ প্রদর্শক আল-কুরআনের নিম্নবর্ণিত আয়াতসমূহ তার প্রমাণ। ইরশাদ হয়েছে,

والأنعام خلقها لكم فيها دفئ ومنا فع ومنها تأكلون -

অর্থ: আর গৃহপালিত পশু তিনি সৃষ্টি করেছেন তোমাদের জন্য এদের থেকে তোমরা উষ্ণতা পাও (গরমের পোশাক) এবং আরো অসংখ্য উপকারী জিনিস। আর এদের (গোস্ত) তোমরা খাও। (১৬:৫)

অর্থ: হে ঈমানদারগন! পূরণ করো তোমাদের প্রতি সকল অর্পিত দায়িত্ব। তোমাদের জন্য হালাল করা হয়েছে সকল চতুষ্পদ জন্তু অন্য কারো নামে তা জবাই করা না হয়ে থাকলে। (৫৪১)

অর্থ: আর গৃহপালিত পশুর মধ্যে তোমাদের জন্য রয়েছে শেখার মতো উদাহরণ। এদের পেট থেকে আমরা এমন কিছু উৎপাদন করি (দুধ) যা তোমরা পান করো। এগুলোর মধ্যে আরো অসংখ্য উপকার রয়েছে তোমাদের জন্য আর এদের (গোস্ত) তোমরা খাও। (২৩:২১)

গ. গোস্ত পুষ্টিকর এবং আমিষপূর্ণ

আমিষ খাদ্য প্রোটিনের অন্যতম শ্রেষ্ঠ উৎস। জৈবিকভাবেই তা প্রোটিন সমৃদ্ধ। আটটি অতি প্রয়োজনীয় এ্যামাইনো এসিড যা দেহের মাধ্যমে সমন্বিত হয় না।

তাই খাদ্যের দ্বারা তা সরবরাহ করতে হয়। মাংসের মধ্যে আরো রয়েছে লৌহ, ভিটামিন বি-১ এবং নিয়াসিন।

ঘ. মানুষের দাঁত সব ধরনের খাদ্য গ্রহণে সক্ষম করে বিন্যস্ত

আপনি যদি পর্যবেক্ষণ করেন তৃণভোজী প্রাণীর দাঁতের বিন্যাসের প্রতি যেমন: গরু, ছাগল, ভেড়া, হরিণ ইত্যাদি। আপনি দেখে বিস্মিত হবেন যে, তা সব একই রকম। সকল পশুর দাঁত ভোঁতা তথা সমতল যা তৃণ জাতীয় খাদ্য গ্রহণের জন্য উপযোগী।

আর আপনি যদি লক্ষ্য করেন মাংসখেকো পশুদের দন্ত বিন্যাসের প্রতি অর্থাৎ বাঘ, সিংহ, শৃগাল, হায়েনা ইত্যাদি। এগুলোর দাঁত ধারালো যা মাংসের জন্য উপযোগী।

পক্ষান্তরে মানুষের দাঁত লক্ষ্য করে দেখলে দেখা যাবে সমতলের ভোঁতা দাঁত যেমন আছে, তেমনি ধারালো এবং চোখা দাঁতও রয়েছে। অর্থাৎ মানুষের দাঁত মাংস ও তৃণ উভয় ধরনের খাদ্য গ্রহণের জন্য উপযোগী। এক কথায় “সর্বভূক'।

কেউ হয়তো প্রশ্ন করতে পারে সর্বশক্তিমান আল্লাহ যদি চাইতেন মানুষ শুধু তরিতরকারী খাবে তাহলে আমাদের মুখে ধারালো দাঁত ক'টি দিলেন কেন? এর দ্বারা এটাই কী প্রমাণিত হয় না যে, খোদ সৃষ্টিকর্তাই চান যে, মানুষ সব ধরনের খাবার গ্রহণ করুক?

ঙ. আমিষ ও নিরামিষ দুই রকমের খাদ্যই মানুষ হজম করতে পারে।

তৃণভোজী প্রাণির হজম প্রক্রিয়া শুধু তৃণ জাতীয় খাদ্যই হজম করতে পারে। মাংসখেকো প্রাণির হজম প্রক্রিয়া শুধু মাংস হজম করতে পারে।

কিন্তু মানুষের হজম প্রক্রিয়া তৃণ ও মাংস উভয় ধরণের খাদ্যই হজম করতে সক্ষম। আল্লাহ যদি চাইতেন আমরা শুধু নিরামিষ খাদ্য ভক্ষণ করি তাহলে তিনি আমাদেরকে এমন হজমশক্তি দিলেন কেন যা দিয়ে তৃণ ও মাংস উভয় ধরনের খাদ্যই হজম করা যায়?

চ. হিন্দু ধর্ম-গ্রন্থ আমিষ খাদ্য গ্রহণের অনুমতি দিয়েছে।

০১. অনেক হিন্দু রয়েছে যারা নিরামিষ ভোজী। তারা আমিষ খাদ্যকে তাদের ধর্ম বিরোধী মনে করে।

অথচ প্রকৃত সত্য হলো, হিন্দুশাস্ত্রই মাংস খাওয়ার অনুমতি দিয়েছে। গ্রন্থসমূহে উল্লেখ আছে- পরম বিজ্ঞ সাধু-সন্তরা আমিষ খাদ্য গ্রহণ করতেন।

০২. হিন্দুদের আইনগ্রন্থ 'মনুশ্রুতি' পঞ্চম অধ্যায় শ্লোক ৩০-এ রয়েছে, খাদ্য ভক্ষণকারী যে খাবার খায়, সেই সব পশুর যা খাওয়া যায়, মন্দ কিছু করে না।

এমনকি সে যদি তা করে দিনের পর দিন। ঈশ্বর নিজেই সৃষ্টি করেছেন কিছু ভক্ষিত হবে আর কিছু ভক্ষণ করবে।

০৩. মনুশ্রুতীর পঞ্চম অধ্যায়ের ৩১ শ্লোকে আরো বলা হয়েছে- 'মাংস ভক্ষণ শুদ্ধ' উৎসর্গের জন্য। ঈশ্বরের বিধান হিসেবে বংশ পরম্পরায় তা জানা আছে।

০৪. আর মনুশ্রুতীর পঞ্চম অধ্যায় ৩৯-৪০ নং শ্লোকে বলা হয়েছে, ঈশ্বর নিজেই সৃষ্টি করেছেন- উৎসর্গের পশু উৎসর্গের জন্যই। সুতরাং উৎসর্গের জন্য হত্যা-হত্যা নয়।

০৫. মহাভারত অনুশাসন পর্ব ৮৮ অধ্যায়ে আছে- ধর্মরাজ যুধিষ্টির ও পিতামহ ভীষ্ম, এদের মধ্যে কথোপকথন, "কেউ যদি শ্রাদ্ধ করতে চায় তাহলে সে অনুষ্ঠানে কী ধরনের খাবার খেতে দিলে স্বর্গীয় পিতৃ পুরুষ (এবং মাতাগন) সন্তুষ্ট হবেন।

যুধিষ্টির বলল, হে মহাশক্তির মহাপ্রভু! কী সেই সকল বস্তু সামগ্রী যা যদি উৎসর্গ করা হয় তাহলে তারা প্রশান্তি লাভ করবে? কী সেই বস্তু সামগ্রী যা (উৎসর্গ করলে) স্থায়ী হবে?

কী সেই বস্তু যা (উৎসর্গ করলে) চিরস্থায়ী হবে? ভীষ্ম বলেন, তাহলে শোন হে যুধিষ্টির! কী সেই সব সামগ্রী। যারা গভীর জ্ঞান রাখে শ্রাদ্ধানুষ্ঠান সম্পর্কে- যা উপযোগী শ্রাদ্ধের জন্য।

আর কী সেই ফল-ফলাদি যা তার সঙ্গে যাবে। সিমের বিচীর সাথে চাল, বালী, মাশা এবং পানি আর বৃক্ষমূল (আদা, আলু বা মূলা প্রভৃতি) তার সাথে ফলাহার। যদি স্বর্গীয় পিতৃদেবদের শ্রাদ্ধে দেয়া হয় হে রাজা!

তা হলে তারা ১ মাসের জন্য সন্তুষ্ট থাকবে। শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে মৎস দিয়ে আপ্যায়ন করলে স্বর্গীয় পিতৃকুল ২ মাস পর্যন্ত সন্তুষ্ট থাকবে। ভেড়ার মাংস দিয়ে ৩ মাস। খরগোশ দিয়ে ৪ মাস। ছাগ-মাংস দিয়ে ৫ মাস।

শুকর মাংস দিয়ে ৬ মাস। পাখীর মাংস দিয়ে আপ্যায়ীত করলে ৭ মাস। হরিণের মধ্যে 'প্রিসাতা' হরিণ শিকার করে খাওয়ালে ৮ মাস এবং 'রুরু' হরিণ দিলে ৯ মাস।

আর গাভীর মাংস দিলে ১০ মাস। মহিষের মাংস দিলে তাদের সন্তুষ্টি ১১ মাস বজায় থাকে। শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে গরুর মাংস দিয়ে আপ্যায়ন করলে, বিশেষ করে বলা হয়েছে তাদের সন্তুষ্টি থাকে পুরো এক বছর।

ঘি মিশ্রিত পায়েশ, স্বর্গীয় পিতৃপুরুষের কাছে গরুর মাংসের মতোই প্রিয়। ডদ্রিনাসার (বড় ষাঁড়) মাংস দিয়ে আপ্যায়ন করলে পিতৃপুরুষ ১২ বছর সন্তুষ্ট থাকেন।

পিতৃপুরুষের মৃত্যু বার্ষিকীর দিনটি যদি শুক্ল পক্ষের হয় আর তখন যদি গণ্ডারের মাংস দিয়ে শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে খাওয়ানো যায়- স্বর্গীয় পিতৃপুরুষের সন্তুষ্টি অক্ষয় হয়ে যায়।

"কালাসকা' কাঞ্চন ফুলের পাপড়ি আর লাল ছাগলের মাংস যদি দিতে পারো তা হলেও তাদের সন্তুষ্টি অক্ষয় হয়ে যাবে।

অতএব আপনি যদি চান আপনার স্বর্গীয় পিতৃপুরুষের সন্তুষ্টি অক্ষয় হয়ে থাকুক তাহলে লাল ছাগলের মাংস দিয়ে শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে আপ্যায়ন করতে হবে।"

ছ. হিন্দু ধর্ম অন্য সকল ধর্মের দ্বারা প্রভাবিত

হিন্দুদের ধর্ম গ্রন্থ তার অনুসারীদের আমিষ খাদ্য গ্রহণের অনুমতি দিয়েছে। তথাপি বহু হিন্দু নিরামিষ ভোজনকে সংযোজন করে নিয়েছে। প্রকৃত পক্ষে এটা এসেছে জৈন' ধর্ম থেকে।

জ. উদ্ভিদেরও প্রাণ আছে।

বিশেষ কিছু ধর্ম খাদ্য হিসেবে শুধুমাত্র নিরামিষ খাদ্য বাধ্যতামূলক করে নিয়েছে। কারণ তারা জীব হত্যার বিরোধী।

যদি কেউ কোনো সৃষ্ট জীবকে হত্যা না করে বেঁচে থাকতে পারে তাহলে নির্দ্বিধায় বলতে পারি, আমি হবো প্রথম ব্যক্তি যে এধরনের জীবন যাপন পদ্ধতিকে বেছে নেব।

অতীত যুগের মানুষ মনে করত উদ্ভিদের প্রাণ নেই। অথচ বর্তমানে তা বিশ্ববাসীর কাছে সূর্যালোকের মতো স্পষ্ট যে, উদ্ভীদেরও প্রাণ আছে। ফলে সম্পূর্ণ নিরামিষ ভোজী হয়েও জীব হত্যা না করার শর্ত পূরণ হচ্ছে না।

ঝ. উদ্ভিদরা ব্যাথাও অনুভব করতে পারে

এর পরেও হয়তো নিরামিষ ভোজীরা বলবেন, প্রাণ থাকলে কী হবে উদ্ভিদ তা ব্যাথা অনুভব করতে পারে না। তাই পশু হত্যার চেয়ে এটা তাদের কম অপরাধ।

আজকের বিজ্ঞান প্রমাণ করে দিয়েছে উদ্ভিদও ব্যাথা অনুভব করে কিন্তু তাদের সে আর্ত চিৎকার মানুষই শোনার ক্ষমতা রাখে না। কারণ 20 Herts থেকে 2000 Herts ওপরে বা নীচের কোনো শব্দ মানুষের শ্রুতি ধারণ করতে সক্ষম নয়।

অথচ একটি কুকুর 40,000 Herts পর্যন্ত শুনতে পারে। এজন্য কুকুরের জন্য নিরব 'হুইসেল' বানানো হয়েছে যার ফ্রীকোয়েন্সী 20,000 Herts এর বেশি এবং 40,000 Herts এর মধ্যে।

এসমস্ত হুইসল শুধু কুকুর শুনতে পারে, মানুষ পারে না। কুকুর এ হুইসেল শুনে তার মালিককে চিনে নিতে পারে এবং সে চলে আসে তার মনিবের কাছে।

আমেরিকার এক খামারের মালিক বহু গবেষণার পর একটি যন্ত্র আবিষ্কার করেছে, যার মাধ্যমে উদ্ভিদের কান্না মানুষের শ্রুতিযোগ্য করে তোলা যায়।

সেই বিজ্ঞানী বোঝে নিতে পারত, উদ্ভিদ কখন পানির জন্য চিৎকার করত। এমনকী এখনকার গবেষণা প্রমাণ করে দিয়েছে যে, উদ্ভিদ সুখ ও দুঃখ অনুভব করতে পারে এবং চিৎকার করে কাঁদতেও পারে।

দু'টি ইন্দ্ৰীয়ানুভূতি কম সম্পন্ন প্রাণীকে হত্যা করার অপরাধ কম নয়। এবার নিরামিষ ভোজীরা তর্কে অবতীর্ণ হয়ে বলবেন যে, উদ্ভিদের মাত্র দু'টি অথবা তিনটি অনুভূতির ইন্দ্রীয় আছে, আর পশুর রয়েছে পাঁচটি। কাজেই পশু হত্যার চেয়ে উদ্ভিদ হত্যার অপরাধের পরিমাণ কম।

ধরুন আপনার এক সহজাত ভাই জন্মগত ভাবেই অন্ধ ও বধির। সে চোখে দেখে না কানেও শোনে না। অর্থাৎ একজন স্বাভাবিক মানুষের চেয়ে দুটি ইন্দ্রীয় তার কম।

সে যখন পূর্ণ বয়স্ক হলো তখন এক লোক নির্দয়ভাবে তাকে খুন করল। খুনী গ্রেপ্তারের পর বিচারালয়ে দাঁড়িয়ে। আপনি কি বিচারপতিকে বলবেন, মহামান্য আদালত খুনীকে আপনি পাঁচ ভাগের তিন ভাগ শাস্তি দিন?

কুরআন বলেছে,

باتها الناس كلوا مما في الأرض خللاً طيبا .

অর্থ: হে মানুষ! পৃথিবীতে যা কিছু আছে তা থেকে পবিত্র উত্তম (জিনিসগুলো) খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করো।(২:১৬৮

ট. গৃহপালিত পশুর সংখ্যাধিক্য

পৃথিবীর প্রতিটি লোক যদি ফল-মূল তরিতরকারী ও শাক স্বজিকে খাদ্য হিসাবে বেছে নেয় তা হলে গবাদী পশুর জন্য ভূ-পৃষ্ঠ ছেড়ে দিয়ে মানুষকে অন্য কোনো গ্রহে গিয়ে বাস করতে হবে।

আর খাল বিল নদী নালা ও সাগর মহাসাগর পানি শূন্য হয়ে পড়বে মাছ ও অন্যান্য জলজ প্রাণীর আধিক্যে।

কেননা উভয় শ্রেণীর জন্ম হার ও প্রবৃদ্ধি এত বেশি যে, এক শতাব্দির বেশি সময় লাগবে না পৃথিবী তাদের দখলে চলে যেতে। সুতরাং সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ তা'আলা খুব ভালো করেই জানেন এবং বোঝেন তাঁর সৃষ্টিকূলের ভারসাম্য তিনি কীভাবে রক্ষা করবেন।

কাজেই এটা অতি সহজেই অনুমেয় যে, তিনি কী কারণে আমাদেরকে মাছ মাংস খাবার অনুমতি দিয়েছেন।

Post a Comment

Previous Post Next Post