পশু জবাই করার ইসলামী পদ্ধতি।
অভিযোগ: মুসলমানরা কেন এত ধীরে ধীরে কষ্ট দিয়ে নির্দয়ভাবে পশু জবাই করে?
ডা. জাকির নায়েকের জবাব: একটি বিরাট অংশ মানুষের সমালোচনার বিষয় বস্তু হলো পশু জবাইয়ের ইসলামী পদ্ধতি।
নিচের বিষয়গুলো পর্যালোচনায় প্রমাণ হয়ে যাবে জবাই পদ্ধতিটি শুধু মানবিকই নয় বৈজ্ঞানিকও বটে।
ক. পশু জবাই করার ইসলামী পদ্ধতি:
ইসলামী পদ্ধতিতে একটি পশু জবাই করতে হলে নিম্নবর্ণিত শর্তগুলো পূরণ করতে হবে।
০১. সর্বোচ্চ পর্যায়ের ধারালো অস্ত্র দ্বারা জবাই করতে হবে।
খুব ধারালো অস্ত্র দিয়ে দ্রুততার সঙ্গে পশুটি জবাই করতে হবে যেন ওটা ব্যাথা কম পায়।
০২. গলনালী, শ্বাশ নালী ও রক্তবাহী ঘাড়ের রগ কাটতে হবে।
'যাবীহাহ্' আরবী শব্দ যার অর্থ 'জবাই করা হয়েছে। জবাই করা হয় গলা, শ্বাসনালী ও ঘাড়ের রক্তবাহী রগগুলো কেটে। মেরুদণ্ডের তন্ত্রদণ্ডের তন্ত্রী কাটা যাবে না।
০৩. শরীরের রক্ত প্রবাহিত হতে হবে। জবায়ের পর দেহ থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করার পূর্বে দেহের সমস্ত রক্ত বের করে দিতে হবে। অধিকাংশ রক্ত বের করে দিতে হবে এই জন্য যে, তা ব্যাকটেরিয়া ও জীবাণু ইত্যাদির নিরাপদ নিবাস ও বংশ বিস্তারের জায়গা।
কাজেই মেরুদণ্ডের তন্ত্রী কোনো মতেই কাটা যাবে না। কারণ হৃদযন্ত্রের দিকে যেসব স্নায়ু তন্তু রয়েছে সেগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যেতে পারে এসময়। যা হৃদপিণ্ডের স্পন্দন থামিয়ে দেবার ফলে রক্ত নালীসমূহে রক্ত আটকা পড়ে যাবে।
খ. রক্ত, রোগ-জীবাণু ও ব্যাকটেরিয়ার বাহন।
জৈব-বিষ ব্যাকটেরিয়া ও রোগ-জীবাণু ইত্যাদির সহজ বাহক রক্ত। সুতরাং ইসলামী জবাই পদ্ধতি স্বাস্থ্যবিধি সম্মত।
কেননা রক্ত এমন, যার মধ্যে জৈব-বিষ, রোগ-জীবাণু ও ব্যাকটেরিয়া বাসা বেধে থাকে। যা অসংখ্য রোগ ব্যাধির কারণ হয়।
ঘ. গোস্ত অনেক দিন ভালো থাকে।
পৃথিবীতে পশু হত্যার মধ্যে ইসলামী পদ্ধতিতে জবাই করা পশুর মাংস বেশি দিন ভালো থাকে। কারণ তাতে রক্তের পরিমাণ থাকে নাম মাত্র।
ঙ. পশু ব্যাথা অনুভব করে না:
ক্ষীপ্রতার সঙ্গে গলনালীগুলো কাটার ফলে মস্তিষ্কের স্নায়ুতে রক্ত প্রবাহ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। যে রক্ত প্রবাহ ব্যাথা বোধের কারণ। এ কারণে পশু ব্যাথা বোধ করে উঠতে পারে না।
মরার সময় ওটা যে ছট্ ফট্ করে তা ব্যাথার জন্য নয়, বরং রক্তের ঘাটতি পড়ে যাওয়ায় মাংসপেশির শৈথিল্য ও সংকোচনের জন্য এবং দ্রুত গতিতে রক্ত বেরিয়ে যাবার কারণে।