আমিষ খাদ্য কি মুসলমানদেরকে উগ্র বানিয়ে দেয়?

অভিযোগ: বিজ্ঞান বলে, যে যা খায় তার আচরণে তার প্রতিক্রিয়া প্রকাশ পায়। তাহলে ইসলাম কেন মুসলিমদেরকে আমিষ খাদ্য গ্রহণের অনুমতি দিল? যেখানে পশুর মাংস ব্যক্তিকে হিংস্র ও দুঃসাহসী করে তুলতে পারে।

আমিষ খাদ্য কি মুসলমানদেরকে প্রচণ্ড উগ্র বানিয়ে দেয়?

আমিষ খাদ্য কি মুসলমানদেরকে প্রচণ্ড উগ্র বানিয়ে দেয়?

ডা. জাকির নায়েকের জবাব:

ক. ইসলামে পশুর মধ্যে শুধু তৃণভোজী পশু খাওয়া অনুমোদিত। এ ব্যাপারে আমি সম্পূর্ণ একমত যে, ব্যক্তি যা খায় তার প্রতিক্রিয়া তার আচরণে প্রকাশ পায়।

বাঘ, সিংহ, নেকড়ে ইত্যাদি হিংস মাংসখেকো প্রাণী খাওয়া ইসলাম কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করেছে- কারণ এ ধরনের হিংস্র প্রাণীর মাংস খেয়ে মানুষ হয়তো সত্যি সত্যিই হিংস্র হয়ে উঠতে পারে।

অর্থাৎ, এদের মধ্যে হিংস্রতা রয়েছে, তাই ইসলামে এগুলোর নিষিদ্ধ করেছে। সে কারণে ইসলাম শুধু মাত্র গরু, মহিশ, ছাগল, ভেড়ার মতো শান্ত স্বভাব ও খুব সহজে পোষমানা প্রাণীর মাংস খেতে অনুমতি দেয়। এ কারণে মুসলমানরা শান্তিকামী, শান্তিপ্রিয়।

খ. কুরআন বলছে- যা কিছু মন্দ রাসূল (সা:) তা নিষিদ্ধ করেছেন,

يأمرهم بالمعروف وينههم عن المنكر ويحل لهم الطيبة ويحرم عليهم الخبيث .

অর্থ: রাসূল তাদেরকে ভালো কাজ করতে আদেশ করেন। আর নিষেধ করেন সমস্ত মন্দ থেকে এবং তিনি তাদের জন্য হালাল করেছেন যা কিছু ভালো, পবিত্র। আর হারাম করেছেন যা কিছু মন্দ, অপবিত্র। (৭:১৫৭)

এ প্রসংগে আল্লাহ বলেন,

 وما أنكم الرسول فخذوه ج وما تهكم عنه فانتهوا . অর্থ: রাসূল তোমাদেরকে যা কিছু দেন তা তোমরা গ্রহণ করো। আর যেসব থেকে তিনি নিষেধ করেন সেসব থেকে বিরত থাকো। (৫৯:৭)

একজন মুসলমানের জন্য তাদের রাসূলের এই কথা যথেষ্ট যে, আল্লাহ তায়ালা চান না মানুষ এমন কোনো ধরনের গোস্ত খায় যেখানে অন্য কিছু ধরনকে অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

গ. মাংসখেকো প্রাণী খাবার ব্যাপারে রাসূল (স:)-এর বাণী

সহীহ বুখারী ও মুসলিম বর্ণিত বেশ কিছু হাদীসের মধ্যে ইবনে আব্বাস (রা:) থেকে বর্ণিত মুসলিম শরীফের “শিকার ও জবাই' অধ্যায়ের ৪৭৫ নং হাদীস, সুনানে ইবনে মাজাহর ১৩ অধ্যায়ের ৩২৩২ থেকে ৩২৩৪ হাদীসসমূহ উল্লেখযোগ্য। রাসূল (স) যাহা খেতে নিষেধ করেছেন,

০১. তীক্ষ্ণ ধারালো দাঁতওয়ালা হিংস্র জন্তু। অর্থাৎ মাংসখেকো বন্য পশু। বিশেষভাবে বেড়াল, কুকুর, বাঘ, সিংহ, শেয়াল, নেকড়ে এবং হায়না ইত্যাদি।

০২. তীক্ষ্ণ দাঁতের অন্যান্য প্রাণী। যেমন ইঁদুর, ন্যাংটি ইঁদুর, ছুঁচো ও ধারালো নখওয়ালা খরগোশ ইত্যাদি।

০৩. সরীসৃপ জাতীয় প্রাণী। যেমন- সাপ, কুমীর ইত্যাদি

০৪. ধারালো ঠোঁট ও নখরওয়ালা শিকারী পাখি। যেমন- চিল, শুকুন, কাক, পেঁচা ইত্যাদি।

পৃথিবীতে এমন কোনো বৈজ্ঞানিক দলিল নেই যে, আমিষ খাদ্য গ্রহণের ফলে মানুষ উগ্র ও হিংস্র হয়ে উঠতে পারে।

Post a Comment

Previous Post Next Post