ইসলামে ধর্মে শুকরের মাংস খাওয়া নিষিদ্ধ কেন?

ইসলামে শুকরের মাংস খাওয়া নিষিদ্ধ কেন?

ইসলামে শুকরের মাংস খাওয়া নিষিদ্ধ কেন?

ডা. জাকির নায়েকের উত্তর: এ কথা সর্বজনবিদিত যে, শুকরের মাংস ভক্ষণ ইসলামে নিষিদ্ধ। নিম্নে বর্ণিত বিষয়গুলো এই নিষিদ্ধতার কারণ।

ক. আল কুরআনে শুকরের মাংসের নিষিদ্ধতা

শুকরের মাংস খাওয়া নিষেধ সম্পর্কে অন্তত চারটি স্থানে উল্লেখ করা হয়েছে- ২:১৭৩, ৫:৩, ৬:১৪৫, এবং

১৬:১১৫।

محترمت عليكم الميتة والدم ولحم الخنزير وما أهل لغير الله يم .

অর্থ: “নিষিদ্ধ করা হলো তোমাদের জন্য (খাদ্য হিসেবে) মৃত পশুর মাংস, প্রবাহিত রক্ত, শুকরের মাংস এবং এমন পশুর মাংস যা (জবাইয়ের সময়) আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নাম স্মরণ করা হয়েছে।" (৫:৩)

খ. বাইবেলে শুকর মাংস খাওয়ায় নিষিদ্ধতা

হয়তো একজন খ্রীষ্টান তার ধর্মগ্রন্থসমূহের উদ্ধৃতি দেখে সন্তুষ্ট হলে দেখতে পাবে যে, বাইবেলের 'লেডীটিকাস' গ্রন্থে শুকরের মাংস ভক্ষণ নিষেধ করেছে।

বলা হয়েছে, “এবং শুকর, যদিও তার খুর দ্বিখন্ডিত এবং খুরযুক্ত পদ বিশিষ্ট। এমন কী সে চিবিয়ে খায়, যাবর কাটে না। (তবু) ওটা অপরিচ্ছন্ন (অপবিত্র) তোমার জন্য।"

একই গন্থের ১১ অধ্যায় ৭৫৮ পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে, "ওগুলোর মাংস তুমি খাবে না এবং ওগুলোর মৃতদেহ তুমি স্পর্শও করবে না, ওগুলো 'অপবিত্র' তোমার জন্য।"

বাইবেলের 'আইযায়াহ, গ্রন্থের ৬৫ অধ্যায় ২ থেকে ৫ পৃষ্ঠায়ও একই নিষিদ্ধতা রয়েছে।

গ. শুকরের মাংস ভক্ষণ বেশ কিছু মারাত্মক রোগের কারণ

অমুসলিম ও নাস্তিকরা হয়তো সঠিক কারণ ও বিজ্ঞানের যুক্তি প্রমাণের সাথে মেনে নিতে পারে- শুকর মাংস খাওয়া কমপক্ষে সত্তুরটি রোগের উদ্ভব ঘটাতে পারে।

শুরুতে আক্রান্ত হতে পারে বিভিন্ন প্রকার কৃমির দ্বারা। যেমন: বৃত্তাকার কৃমি, ক্ষুদ্র কাঁটাযুক্ত কৃমি ও বক্র কৃমি। এর মধ্যে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ও মারাত্মক হলো 'টাইনিয়া সোলিয়াম'। যেটাকে “ফিতা কিমি' বলা হয়।

এটা পেটের মধ্যে পালিত এবং অনেক লম্বা হয়। এর ডিম রক্ত প্রবাহে প্রবেশ করে এবং শরিরের প্রায় সকল অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে ঢুকে পরতে পারে।

যদি এটা মস্তিষ্কে ঢুকে যায় তাহলে স্মৃতি ভ্রষ্ট হয়ে যাবার কারণ হতে পারে। হৃদ যন্ত্রের ভেতর ঢুকলে বন্ধ করে দিতে পারে হৃদযন্ত্রক্রিয়া।

চোখে ঢুকতে পারলে অন্ধত্বের কারন, কলিজীতে ঢুকে পড়লে সেখানে মারাত্মক ক্ষতের সৃষ্টি করে। অর্থাৎ এটা দেহের যে কোনো অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের কর্মক্ষমতাকে ধ্বংস করে দিতে পারে।

এরপরও রয়েছে আরো ভয়ঙ্কর 'ত্রীচুরা টিচুরাসীস'। এ সম্পর্কে একটা সাধারণ ধারণা হলো ভালো করে রান্না করলে এর ডিম মারা যায়।

এর ওপরে আমেরিকায় গবেষণা চালানো হয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে রান্না করার পরও প্রতি ২৪ জনের ২২ জন এই 'ত্রীচুরা টিচুরাসীস' দ্বারা আক্রান্ত। প্রমাণিত হলো সাধারণ রান্নায় এ ডিম ধ্বংস হয় না।

ঘ. শুকর মাংসে চর্বি উৎপাদনের উপাদান প্রচুর

শুকর মাংসে পেশী তৈরীর উপাদানের পরিমাণ অত্যন্ত নগণ্য। পক্ষান্তরে চর্বি উৎপাদনের উপাদান অনেক। এ ধরণের চর্বি অধিকাংশ রক্ত নালীতে জমা হয়- যা কারণ হয় হাইপার টেনশান এবং হার্ট এ্যাটাকের।

অবাক হবার কিছু নেই যে, ৫০% ভাগ আমেরিকান হাইপার টেনশানের রুগী।

ঙ. পৃথিবীতে শুকর নোংরা ও পঙ্কিলতম জন্তু

এ জন্তুটি নিজেদের বিষ্ঠা, মানুষের মল ও ময়লাপূর্ণ জায়গায় বসবাস করতে চায়। আল্লাহ তাআলা তাঁর সমাজবদ্ধ সৃষ্টি কূলের মল, মেথর বা ময়লা পরিষ্কারক হিসাবেই সম্ভবত এটি সৃষ্টি করেছেন।

আজ থেকে ৫০ কিংবা ৬০ বছর আগেও যখন সেনিটারী পায়খানা সিস্টেম আবিষ্কৃত হয়নি তখন যেকোনো শহরের পায়খানার ধরন ছিল, পশ্চাৎ থেকে মেতর এসে তা ট্যাঙ্কি ভরে নিয়ে যেতো এবং শহরের উপকণ্ঠে ফেলতো। যা ছিল শুকরদের পরম আনন্দ নিবাস।

অনেকেই হয়তো এখন বিতর্কে অবতীর্ণ হবেন উন্নত বিশ্বে এখন শুকরের পরিচ্ছন্ন খামার করা হয়েছে। যেখানে এদের লালিত পালিত হয়।

তথাপিও তাদের এই উন্নত, স্বাস্থ্যকর খামারেও ওগুলো গাদাগাদি করেই রাখা হয়। ওদেরকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার যত ধরনের চেষ্টাই করা হোক না কেন প্রকৃতিগতভাবেই ওগুলো নোংরা।

অতি আনন্দের সাথেই ওরা ওদের নিজেদের ও সঙ্গীদের বিষ্ঠা নিয়ে ওদের চোখ নাক দিয়ে নাড়া চাড়া করে অতঃপর উৎসবের খাদ্য হিসেবেই খায়।

চ. শুকর নির্লজ্জতায় জঘন্যতর পশু।

ভূ-পৃষ্ঠের ওপরে শুকর অশ্লীলতায় নির্লজ্জতর জন্তু। শুকর একমাত্র পশু যেটা তার স্ত্রী-সঙ্গীর সঙ্গে সংগম করার সময় অন্যান্য পুরুষ-সঙ্গীদের ডেকে নেয়।

আমেরিকার ও ইউরোপের বেশিরভাগ লোকের প্রিয় খাদ্য শুকর মাংস। খাদ্যভ্যাস আচরণে প্রকাশ পায়, বিজ্ঞানের এ সূত্রের জীবন্ত নমুনা এরাই।

তাদের প্রিয় সংস্কৃতি ড্যান্স পার্টি গুলোতে নাচতে নাচতে উত্তেজনার উত্তুঙ্গে উঠে একে অপরের সাথে সোয়া'র জন্য বউ বদল করে নেয়।

অনেকেই আবার জীবন্ত নীল ছবি স্বচোখে দেখার জন্য স্ত্রীর সঙ্গে সংগম করতে বন্ধু-বান্ধব ডেকে নেয়। তারপর একজন নারী নিয়ে চলে অনেক পুরুষের সম্মিলিত লীলাখেলা। ধন্য উন্নত বিশ্ব, ধন্য তাদের সর্বোন্নত সংস্কৃতি। 

Post a Comment

Previous Post Next Post