মহিলারা বাইরে কাজ করতে পারবে কি? তারা কি ক্যারিয়ার গড়তে পারবে?

মহিলারা বাইরে কাজ করতে পারবে কি? তারা কি ক্যারিয়ার গড়তে পারবে?

উত্তরে ডা. জাকির নায়েক: পুরুষকে যেমন উপার্জন করতেই হবে তেমনি মহিলারা কাজ করবেই এটা আবশ্যক নয়। ইসলামে একজন নারীর ভরণপোষণের দায়িত্ব বিয়ের আগে তার বাবা বা ভাইয়ের, আর বিয়ের পরে তার স্বামীর।

অর্থাৎ ইসলাম অনুযায়ী অর্থনৈতিক সমস্যা সমাধানের দায়িত্ব পুরুষের, নারীর নয়। তবে কোনো নারী নিজের ইচ্ছায় উপার্জন করতে চাইলে করতে পারবে। আর যদি সে বলে আমি কাজ করতে চাই না তাহলে স্বামী জোর করতে পারবে না।

মহিলারা বাইরে কাজ করতে পারবে কি? তারা কি ক্যারিয়ার গড়তে পারবে?

ইসলাম ধর্মে নারী ও পুরুষ সমান। কিন্তু এ সমান মানে অভিন্ন নয়। কোন পুরুষ যদি চায় যে সে গর্ভধারণ করবে তা কি সম্ভব? সম্ভব নয়। ইসলামে কিছু কাজ ফরজ, কিছু সুন্নত আর কিছু নফল। অর্থাৎ কাজের বিভিন্ন ক্যাটাগরি আছে।

লক্ষ্যণীয় যে, এ ক্যাটাগরি অনুযায়ী পুরুষদের ওপর নারীর ভরণপোষণের দায়িত্ব নেয়া ফরজ। এছাড়া নারী পুরুষের শারীরিক ও মানসিক গঠন ও পারিপার্শ্বিক অবস্থার ওপর ভিত্তি করে কাজের ভিন্নতা থাকবে। এটাই স্বাভাবিক।

সুতরাং, নারীরা যদি প্রয়োজনে উপার্জন করতে চায়, করতে পারবে, শর্ত হলো তারা হিজাব পরবে, পুরুষ ও নারীর কর্মস্থল হবে আলাদা। তারা একসাথে কাজ করবে না। প্রয়োজন হলে তারা কথা বলতে পারবে, কিন্তু প্রয়োজন ব্যতীত গল্প, গুজব, আড্ডা, হাসি-তামাশা ইত্যাদি করা যাবে না।

নারী পুরুষ একসাথে কাজ করার ফল কী হয় তা সবারই জানা। মহিলারা শিক্ষক হতে পারে, ডাক্তার হতে পারে, কাপড় বানাতে পারে, এমনকি ব্যবসায়ীও হতে পারে। তবে কর্মক্ষেত্র আলাদা হতে হবে।

কিছু কিছু কাজ মহিলাদের জন্য নিষিদ্ধ। আবার কিছু কিছু কাজ পুরুষদের জন্যও নিষিদ্ধ। কিছু কাজ উভয়ের জন্যই হারাম। মহিলাদের মডেলিং করা, নাচার সুযোগ ইসলামে নেই। তেমনি পুরুষ বা নারী কারও জন্যই মদের দোকানে কাজ করা জায়েয নেই। জুয়ার আসরে কাজ করাও উভয়ের জন্য নিষিদ্ধ।

মহিলারা অবশ্যই ক্যারিয়ার গড়তে পারবে, তবে তা ইসলামী শরীয়ার মধ্যে থেকে। মহিলাদের প্রধান দায়িত্ব হলো মা ও স্ত্রী হিসেবে। কিন্তু মহিলারা যদি তাদের এ দায়িত্বগুলো যথাযথভাবে পালন না করে শুধু চাকরিতে মনোনিবেশ করে তাহলে তারা তাদের ইসলাম প্রদত্ত সম্মান হারাবে।

একজন মায়ের মর্যাদা সম্পর্কে হাদীসে বলা হয়েছে,

الجنة تحت أقدام الأمهات .

অর্থঃ “মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেশত।" 

এছাড়াও সহীহ বুখারীর বুক অব আদাব ৮ নং খণ্ডের দ্বিতীয় অধ্যায়ের ২য় হাদীসে এসেছে,

عن أبي هريرة قال قال رجل يا رسول الله من أحق بحسن صحابتي قال أمك قال ثم من قال أمك قال ثم من قال أنه قال

ثم من قال أبوك .

অর্থ: “একজন লোক নবীজীকে প্রশ্ন করল, সবচেয়ে বেশি ভালোবাসা কার প্রাপ্য? নবীজী সে লোকটিকে বললেন তোমার মা। লোকটি বলল, তারপর কে? নবীজী বললেন, তোমার মা। লোকটি বলল, এরপর কে? নবীজী আবারও বললেন, তোমার মা। লোকটি বলল, এরপর কাকে ভালবাসব। নবীজী তাকে বললেন, তোমার বাবা।

অর্থাৎ চারভাগের তিনভাগ ভালোবাসা ও সাহচর্য পাবেন মা ও একভাগ পাবেন বাবা। কিন্তু যে সকল মহিলারা তাদের ক্যারিয়ারের পিছনে গুরুত্ব বেশি দিচ্ছে, তারা তাদের এ বিশাল সম্মান হারাচ্ছে। এখানে হালাল ক্যারিয়ারের কথাই বলছি। হারাম কাজ যেমন মডেলিং করার প্রশ্নই ওঠে না।

যাই হোক, ইসলামি সিমার মধ্যে থেকে মহিলারা ক্যারিয়ার গড়তে পারবেন, যাতে করে জান্নাতে যাওয়া যায়।


Post a Comment

Previous Post Next Post