পবিত্র মক্কা ও মদীনায় অমুসলিমদের প্রবেশাধিকার নেই কেন?
ডা. জাকির নায়েকের উত্তর: একথা সত্য যে, আইনত মক্কা ও মদীনায় অমুসলিমদের প্রবেশানুমতি নেই। নিম্নে বর্ণিত বিষয়গুলো এই নিষিদ্ধতার নেপথ্য কারণ।
ক. সেনানিবাস এলাকায় সাধারণ নাগরিক প্রবেশানুমতি পায় না।
আমি একজন ভারতীয় নাগরিক, তা সত্ত্বেও এদেশের এমন কিছু জায়গা আছে যেখানে আমার অবাধে প্রবেশানুমতি নেই। যেমন, সেনানিবাস।
পৃথিবীর প্রত্যেকটি দেশেই সাধারণ নাগরিক প্রবেশের অনুমতি নেই এমন কিছু এলাকা রয়েছে। কেবল মাত্র সেনাবাহিনীর সদস্য এবং প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত বিষয়াদির সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ সে সব এলাকায় প্রবেশানুমতি পায়।
একইভাবে ইসলাম গোটা বিশ্ববাসীর জন্য একটি বিশ্বজনীন জীবন ব্যবস্থা। মক্কা ও মদীনা এ দু'টি পবিত্র নগরিকে ইসলামের সেনানিবাস ধরা যেতে পারে।
এখানে শুধু যারা তার অনুসারী এবং এর প্রতিরক্ষার সাথে জড়িত তারাই প্রবেশানুমতি পায় অর্থাৎ মুসলমানরা।
সেনানিবাস সংরক্ষিত এলাকায় সাধারণ নাগরিকের প্রবেশ নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে আপত্তি তোলা যেকোনো বিবেকবান মানুষের নিকট অযৌক্তিক বলে গণ্য হবে।
অনুরূপভাবে কোনো অমুসলিমের মক্কা-মদীনায় প্রবেশাধিকার নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন সঙ্গত বলে বিবেচিত নয়।
খ.মক্কা ও মদীনায় প্রবেশের 'ভিসা':
০১. যখনি কোনো লোক অন্য কোনো দেশে ভ্রমণ করতে চায়। প্রথমে তাকে সেদেশের 'ভিসা' পাবার জন্য আবেদন করতে হয়।
অর্থাৎ সে দেশে প্রবেশের অনুমতি। প্রতিটি দেশে এ ক্ষেত্রে নিজস্ব আইন, 'নীতিমালা এবং কিছু শর্ত' রয়েছে এসব কিছু পূরণ না হলে তারা 'ভিসা' দেবে না।
০২. ভিসা প্রদানের ক্ষেত্রে অত্যন্ত কঠিনভাবে রক্ষণশীল দেশগুলোর মধ্যে সবার ওপরে আমেরিকা।
বিশেষভাবে তৃতীয় বিশ্বের কোনো নাগরিককে ভিসা প্রদানের ব্যাপারে তাদের আছে অসংখ্য নিয়ম কানুন। আরো রয়েছে দুর্লভ ও দুরূহ শর্তসমূহ যা সাধারণ লোকদের আয়ত্বাধীন নয় কোনো ভাবেই।
০৩. আমি সিঙ্গাপুর ভ্রমনে গিয়েছিলাম। তাদের ইমিগ্রেশন ফর্মে উল্লেখ ছিল- মাদকদ্রব্য বহনকারীর জন্য “মৃত্যুদণ্ড”। এখন সিঙ্গাপুরে প্রবেশানুমতি চাইলে আমাকে তাদের যে আইন তা মেনেই নিতে হবে।
আমি তো আর বলতে পারি না 'মৃত্যুদণ্ড' মধ্যযুগীয় নৃশংস বর্বরদের শাস্তি। তাদের যাবতীয় নিয়ম-কানুন এবং শর্তগুলোকে যদি আমি মেনে নেই কেবলমাত্র তখনই আমাকে সে দেশে প্রবেশানুমতি দেবে।
০৪. 'ভিসা'- পৃথিবীর যেকোনো লোকের জন্য মক্কা ও মদীনায় প্রবেশের অনুমতি পেতে হলে সর্বপ্রথম যে শর্তটি পূরণ করতে হবে তা হলো তার মুখে বলতে হবে 'লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ'।
অর্থাৎ "মানা যায় এমন কেউ নেই, কিছু নেই আল্লাহ ছাড়া এবং মুহাম্মাদ (স) তাঁর প্রেরিত রাসূল"।