ভূয়া অনলাইন জব অফার! ফাঁদে পা দিবেন না।

ধান্ধাবাজির সীমায় অনলাইন জব অফার, বোকা বানিয়ে লুট করছে হাজার টাকা!

"ধান্ধাবাজের ধোঁকায় পড়ে আন্দাজে করলে সাধন,

কোন সাধনে মিলবে রে সেই পরম ধন?"

 - ২০১২ সালে প্রথম প্রকাশিত শিল্পী কিরণ চন্দ্র রায়ের গানের চরণ এটি। হঠাৎ স্বরণ হলো তাই আমার লেখনির শুরুতেই যুক্ত করে নিতে ভুলি নি। হ্যাঁ, ভুলবো না আমি আপনি আমরা সবাই! কেনো এই কথাটি বলছি? কেনো বলতে গেলাম? আপনারা ঠিক বুঝে উঠতেই পারেন নি।

তা অবশ্যই ঠিক। ধান্ধাবাজের মিষ্টি সুরেলা আহ্বানে আপনাকের ভুল করতে বলিনি, সাবধান হতে হবে এটাই চাই। চাকচিক্য অফার আর মন ভুলানো সুবিধাদির চাহিদা দেখিয়ে পকেট কেটে চলে যাবে ধোঁকাবাজরা টেরও পাবেন না। যা বলতে চাচ্ছিলাম, সহজ-সরল ব্যক্তি তো দূরের কথা চালাক মানুষও বোকা বনে যেতে সময়ের প্রয়োজন পড়ে না কৌশলই যথেষ্ট।

আর এসবকে পুঁজি করে অনলাইনে সোশ্যাল মাধ্যমগুলোতে মনুষ্যত্বের মুখোশ পড়ে ফেইক ইনফো দিয়ে আইডি খুলে একদল বিপদগামীরা বিভিন্ন গ্রুপ, ফেসবুক পেজ আর ইউটিউবে (যেখানে সব বয়সি মানুষের বিরাট পদচারণা) সর্বত্রই ইন্টারনেটে ঘরে বসে টাকা কামানোর বিরাট সুযোগ-সুবিধার কথা বলে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে একদল পল্টিবাজরা। এজন্যই আমি বলেছিলাম শিল্পীর সুরেলা গলার গানের মমার্থ কথা। ধোঁকায় সর্বস্বান্ত হওয়ার আগে সাবধান হন।

যারা সরলতার অজুহাতে, বেকার তরুণ-তরুণীদের ব্যবহার করে অর্থ কামাই করছে ও করাচ্ছে জন সাধারণকে বোকা বানিয়ে। কৌশলি হয়ে টাকা হাতিয়ে নিয়ে ব্লক করে দিচ্ছে। এরা মেয়েদের নামে ফেক আইডি খুলে নানা বয়সি মানুষদের সাথে প্রতারণা করে আসছে। তাই আমি, আপনি আমরা সবাই সাবধানতা অবলম্বন করে এদের প্রতিহত করতে হবে।

এ ধরায় অর্থ-কড়ি আয় এতো সহসাধ্য বিষয় নয়। মানুষের অন্যান্য চাহিদার পাশাপাশি অর্থেরও বিরাট চাহিদা রয়োছে। হন্য হয়ে, শ্রম দিয়ে, পরিবারের মায়া ছেড়ে মানুষ এক স্থান থেকে অন্য স্থানে এসে সব কিছু বিসর্জন দিয়ে ভবিষ্যতে ভালো থাকার আশায় কাজ করে অর্থ আয় করছে।

আর এরা কিনা প্রতারণার জাল বিছিয়ে বসে আসে। তাদের স্ট্যাটাস আর পোস্ট গুলোতেও রমরমা সুযোগ-সুবিধার ছড়াছড়ি। মিষ্টিতে মাছি বসবে, মধুতে মৌমাছির আনাগোনা থাকবে। এই পলিসিকে কেন্দ্রে করে মিষ্টি-মোয়া ছুড়ে সর্বহারা করছে  তরুণ-তরুণীদেরকে।

ইনকাম আর চাকুরির নানা ভুয়া বিজ্ঞাপন বানিয়ে লুটে নিচ্ছে টাকা-পয়সা। তাদের পোস্টে লক্ষনীয় বেশ কিছুই সন্দেহাতীত। প্রতিদিন ৪০-৭০ মিনিটের কাজে প্রতিদিন ইনকাম ২০০-৩০০ টাকা! ইনকাম করে আবার প্রতিদিন কাজের টাকা প্রতিদিন নিতে পারাও যায়। কাজ করতে চাইলে সরাসরি ইনবক্সে ম্যাসেজ দেওয়ার কথা বলে তাবিজ বিক্রি শুরু করে দেয়।

আবার, কোন কোন ফেক আইডি থেকে মনোরঞ্জক বিজ্ঞাপনের হিড়িক দেখা যায়। শুরুতেই ২০২১ সালের বিরাট নিয়োগ! তাদের নিয়োগ বিজ্ঞাপনে নেয়া হচ্ছে বেকার ছেলে মেয়ে। শিক্ষাগত যোগ্যতায় এসএসসি, এইচএসসি ছাড়াও শিক্ষিত না হলেও গৃহিনীদের টার্গেট এদের।

নিজের ইচ্ছামতো সময়ে কাজে ধরিয়ে দেয়ার সুযোগ দেখিয়ে তারা বেতন অফার করছে মাসে ৮০০০-১০০০০ হাজার। বাহ্, এতো সোনার হরিণ সহজেই হাতে মিলছে। কাজটি কেউ পেতে চাইলে ইনবক্সে ডেকে মন্ত্র পড়া দিচ্ছে, তাবিজ বিলিয়ে দিচ্ছে। ধান্দাবাজি করে টাকা ছিনিয়ে নিচ্ছে, নানা কারণ আর অজুহাত সৃষ্টি করে। আর বোকার মতো তাদের কাঝে বিকাশে টাকা পাঠিয়ে সর্বহারা হচ্ছে সাধারণ মানুষরা।

ফেক আইডি দিয়ে পোস্ট করে আবার নিজের দাবি করছে ওরা রিয়েল। আবার তাদের বেশ কয়েকটি চক্রের এক একটি গ্রুপও আছে যারা কিনা ওই পোস্টের কমেন্টসে পজিটিভ কমেন্ট করবে, আর পেজেও পজিটিভ রিভিউ দিবে। যাতে অন্যান্যরা সত্য মনে করে।

অনেকে আবার এড ফি দেয়ার কথা বলে টাকা নিয়ে উদাও হয়ে যায়। মিষ্টি সুরে উক্ত কথাটি লিখে দিতেও ওরা ভুল করে না, 'আপনার জীবনটা পাল্টে দিবে শুধু এই চাকরিটা।

তাদের জব অফারে লোকেদের নিয়োগ যেনো শেষ হতেই চায় না, সুযোগ বুঝে কাজ সেরে নিতে ওরা বেশ পটু। আর ওরাই যেনো চাকরি প্রত্যাশিদের চাকুরি দিতে এবং দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে কাজ করে যাচ্ছে ভাবটাই যেনো এমন। উদ্দ্যোক্তা সেজে সাপ হয়ে বস আছে তা কে জানে!

তাই, এসবের মোহে নিজেকে আবদ্ধ না করে স্বোচ্ছার হোন, সচেতন হোন। অপরকে জানান, ছড়িয়ে দিন সকলের জানার পরিধিকে বাড়িয়ে দিন।

লেখা: মো. আজিজুর রহমান।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন