স্ত্রী-প্রজননতন্ত্রের আভ্যন্তরীণ অঙ্গগুলোর নাম।

মেয়েলোকের যৌনাঙ্গের ক্ষুদ্রোষ্ঠ আর মুত্রনালীর ঠিক মাঝখানে আধা ইঞ্চি ব্যাসযুক্ত গোলাকার সিমের বিচির মতো দুটি গ্রন্থি দেখা যায়, এই গ্রন্থি হতে দুটি সরু নল বের হয়ে যোনী মুখের নিকট এসে শেষ হয়েছে।

এই গ্রন্থি দুটি সান্দনী গ্রন্থি। এই গ্রন্থি হতে সর্বদা এক প্রকার আঠা আঠা পিচ্ছল রস বের হতে থাকে। স্ত্রীলোকের কামনা বাসনার সময় এই রস অধিক পরিমাণে বের হয়।

আবার ঐ রস স্বাভাবিকভাবে সর্বদা কিছু কিছু বের হতে থাকে। এই রস বের হয়ে যোনীনালীকে সর্বক্ষণ ভিজিয়ে রাখে বলে রতিক্রিয়ার সময় কষ্ট হয় না এবং হাঁটাচলায় ঘর্ষণে ব্যথা পায় না। 

স্ত্রী-প্রজননতন্ত্রের আভ্যন্তরীণ অঙ্গগুলোর নামসমূহ-

স্ত্রীলোকের সানন্দী পুরুষাঙ্গের কাউপার গ্রন্থির সাথে কিছুটা মিল আছে।

স্ত্রী-প্রজননতন্ত্রের আভ্যন্তরীণ অঙ্গগুলোর নামসমূহ-

১। ফাণ্ডাস

২। জরায়ু দেহ

৩। জরায়ু-গ্রীবা।

৪। জরায়ু মুখ।

৫। যোনীনালী।

৬। যোনীপথ।

৭। বৃহদৌষ্ঠ।

৮। ক্ষুদ্রোষ্ঠ

৯। মূত্রাশয়।

১০। ভগ্নাঙ্কুর

১১। মলদ্বার

১২। আভ্যন্তরীণ যৌনী-প্রাচীর।

১৩। বাইরের যোনী প্রাচীর।

জরায়ু কী?

পেঁপে বা লাউ উল্টে ধরলে যেরকম দেখতে পাওয়া যায়, মেয়েদের জরায়ুটা অনুপ। অথবা কিছুটা পানের বটুয়া বা রাবারের বেলুনের মত হয়ে থাকে। তার গলাটা চিকন এবং পেটটা মোটা।

এটা লম্বায় তিন ইঞ্চি হয় এবং চওড়ায় দুইঞ্চি হতে আড়াই ইঞ্চি হয়ে থাকে। এই জরায়ুর ভিতরেই ভ্রুণের আবির্ভাব এবং ক্রমবৃদ্ধি হয়ে থাকে।

জরায়ুর অভ্যন্তরীণ প্রাচীর এক প্রকার ঝিল্লি দ্বারা আবৃত। এর জন্য জরায়ুর ভ্রূণ বিকাশোপযোগী হয়। মোটামোটিভাবে জবায়ূর তিনটি অংশ আছে।

জরায়ুর উপরের অংশকে ফাণ্ডাস, মধ্যের ফুলা চওড়া অংশটিকে জরায়ুর দেহ এবং নিচের চিকন মুখকে জরায়ুর গ্রীবা বলা হয়। মেয়েদের জরায়ুর আকৃতি রিভূজের মতো তলপেটের গহরে উপরের ভাগে এর অবস্থান।

উপরের মোটা ভাগ উঁচুদিকে হেলে থেকে সরু জরায়ুগ্রীবা একটি গোল আধারের মতো মাংসপিণ্ডে পরিণত হয়ে যোনীনালীর শেষ ভাগের সাথে এসে মিশেছে।

যোনীর সীমা পর্যন্ত এই অংশটুকুকে তলপেটের মুখ বলা হয়। একটি সরু ছিদ্রপথ বরাবর জরায়ুর ভিতর গিয়ে শেষ হয়েছে। মেয়েদের সন্তান প্রসবের সময় এই সরু ছিদ্র পথটি বেশ চওড়া হয়ে যায়।

গর্ভের শেষ অবস্থায় প্রসবকালে জরায়ুর মাপ দশ হতে এগোরো ইঞ্চির মতো হয়ে থাকে। প্রসবাস্তে জরায়ুটা এক দেড় মাসের ভিতরে পূণরায় আস্তে ধীরে ছোট হয়ে যায়। জরায়ুর অবস্থান মেয়েদের হল প্রকোষ্ঠ আর মুত্রাশয়ের মাঝ বরাবর।

ডিম্বকোষ কী?

স্ত্রীলোকের ডিম্ববাহী নলের নিচে জরায়ুর দুদিকে বাদামের মতো আকৃতি বিশিষ্ট দুটি গ্রন্থিকে বলা হয় ডিম্বকোষ। দৈর্ঘ্যে প্রায় দুই ইঞ্চি এবং প্রস্থে এক ইঞ্চির মতো।

এখানে গর্ভ সঞ্চারণের জন্য অসংখ্য ডিম্ব সৃষ্টি ছাড়াও এক প্রকার রস বের হয়। পুরুষের পৌরুষত্ব, সৌন্দর্য এবং মাতৃত্বের পরিপূর্ণতা এর দ্বারা বিকশিত হয়ে থাকে।

নারীর যৌবনের লাবণ্যতা, কাম-বাসনা, প্রেম প্রীতি ও ভালোবাসা ইত্যাদি এই ডিম্বকোষের মাধ্যমেই হয়ে থাকে। যে সকল স্ত্রীলোকের রোগের কারণে ডিম্বকোষ অস্ত্রোপাচার করে অপসারণ করা হয়েছে তাদের লাবণ্যময়ী সৌন্দর্য মাঝ পথেই হারিয়ে গেছে। শরীর শুকনা, ঋতুস্রাব, এবং সন্তান ধারণের শক্তি চিরদিনের জন্য বন্ধ হয়ে গেছে।

উৎস-

বই: একান্ত নির্জনে: গোপন আলাপ

লেখক: মুফতী আল্লামা হাকীম আশরাফ আমরহী।

Post a Comment

Previous Post Next Post