জামাআতের নামাযে ইমামের সুরা ফাতেহা পড়ার পরে উচ্চস্বরে আমীন বলা জায়েয কি না?
ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর (রাহিমাহুল্লাহ): আমীন জোরে বলার সহীহ হাদীস রয়েছে। সাহাবিরা আমীন জোরে বলতেন। তাবেয়িরাও বলতেন। আবার আমীন আস্তে বলারও হাদীস আছে।
সনদগতভাবে অত্যন্ত সহীহ হাদীস রয়েছে। তবে মুহাদ্দিসগ এটাকে শায বলেছেন। সর্বাবস্থায় আমীন বলাটা একটা মুস্তাহাব কাজ।
আমীন না বললেও সালাতের কোনো ক্ষতি হবে না। আমীন জোরে বা আস্তে দুভাবেই বলা যেতে পারে। তবে আমাদের মনে রাখতে হবে, আমাদের আশেপাশের মুসল্লিদের যেন কষ্ট না হয়।
যে মসজিদে সবাই আস্তে বলেন, আমি যদি এমন জোরে বলি যে, পাশের মুসল্লি ভয় পেয়ে যান, নামাযের মনোযোগ নষ্ট হয়, মোবাইলের রিঙটোন বাজার মতো একটা অসুবিধা হয়- তাহলে এতে আমার সোয়াব হবে না, গোনাহ হবে।
যদি জোরে বলাকে কেউ উত্তম মনে করেন, তাহলে সামান্য জোরে আমীন বলবেন, এটাই যথেষ্ট। উভয় কর্মেরই হাদীস আছে।
হাদীসের গ্রহণযোগ্যতার বিচারে ফকীহগণ এবং মুহাদ্দিসগণের মতভেদ আছে। আমাদের মনে রাখতে হবে, আমরা জোরে আমীন বলি অথবা আস্তে, উভয় ক্ষেত্রে আমরা আল্লাহকে সন্তুষ্ট করতে চাচ্ছি।
এমন যেন না হয়, অমুক আস্তে বলছে আমি জোরে বলব। অথবা অমুক জোরে বলে তাই আমি জোরে বলব না।
আবার এমনও হয়, কেউ জোরে বললে আমরা মনে করি মহাপাপ হয়ে গেল। মসজিদ থেকে তাকে আমরা বের করে দিচ্ছি। এটা খুব দুঃখজনক।
যেটা সুন্নাতে আছে, সাহাবিরা করেছেন, এটা অথবা ওটা, আমরা দুটোর যেটাকেই ঘৃণা করি, প্রকারান্তরে রাসূলের হাদীসকে ঘৃণা করছি।
সাহাবিদের কর্মকে ঘৃণা করছি। আমার অনুরোধ হলো, আমাদের মসজিদে মহাপাপীরা নামায পড়ে, কিছুই বলি না। কিন্তু জোরে আমীন বললে রাগ করি অথচ আমলটা সহীহ সুন্নাহসম্মত।
আবার মসজিদের ভেতর নামায হচ্ছে না এমন পাপ করা হচ্ছে, যেটা হাদীসেই বলা হয়েছে নামায হবে না, রুকু সিজদা হচ্ছে না; তাদেরকে কিছু বলছি না। আমীন আস্তে বললে বলছি যে, নামাযই হয়নি। এটা খুবই দুঃখজনক।