প্রিয় পাঠক, আরেকটি নতুন আর্টিকেলে আপনাকে স্বাগত।
আজকের এই আর্টিকেল থেকে আমরা জানবো ই-সিম (eSim) সম্পর্কে। ই-সিম কী, ই-সিম কীভাবে কাজ করে, ই-সিম ব্যবহারের কিছু সুবিধা ইত্যাদি।
সময়ের সাথে সাথে, প্রযুক্তিতে অনেক পরিবর্তন এসেছে।
যেখানে আগে ফোনে অনেক বড় সাইজের সিম প্রবেশ করানো হতো, তারপর সময়ের সাথে সাথে এর আকার ধীরে ধীরে ছোট হয়েছে।
প্রথমে এসেছে সিম, তারপরে এসেছে মিনি সিম, মাইক্রো সিম, ন্যানো সিম এবং এখন এসবের পর ই-সিমের যুগ এসেছে।
সারা বিশ্বে লঞ্চ হওয়া বেশিরভাগ ফোনে এখন ই-সিমের ফিচার রয়েছে। আপনি জেনে খুশি হবেন, বাংলাদেশেও প্রথমবারের মতো গ্রামীণফোন নিয়ে এসেছে পরিবেশবান্ধব 4G ই-সিম।
তাই আপনার জানা উচিত ই-সিম কী, ই-সিম কীভাবে কাজ করে, এবং এর উপকারিতা কী কী, এবং কীভাবে এটি সক্রিয় করতে হয়।
eSim কী? এটা কীভাবে কাজ করে?
ই-সিম হলো একটি ভার্চুয়াল সিম, যা স্মার্টফোন এবং স্মার্টওয়াচের মধ্যে সমন্বিত থাকে এবং তা সাধারণ ফিজিক্যাল সিমের মতোই ব্যবহার করা যায়।
অনেকে এটাকে ইলেকট্রনিক সিমও বলে থাকে। এর আকার 6×5মি.মি.।
যা স্মার্টফোন বা ডিভাইসের মাদারবোর্ডে আগে থেকে সমন্বিত করা থাকে। আপনি চাইলেই এটি অপসারণ করতে পারবেন না।
তবে আপনি চাইলে সহজেই আপনার নাম্বার বা অপারেটর পরিবর্তন করতে পারেন।
eSim এর পূর্ণরূপ কী?
ই-সিমের (eSim) পূর্ণরূপ হলো এমবেডেড সাবস্ক্রাইবার আইডেন্টিটি মডিউল (Embedded Subscriber Identity Module)।
ই-সিম ব্যবহারের উপকারিতা। | ই-সিম ব্যবহারের সুবিধাসমূহ।
ই-সিম ব্যবহারের অনেক সুবিধা রয়েছে, নিচে সেগুলো তুলে ধরলাম।
✪ ই-সিম ফোনে আগে থেকেই এমবেডেড করা থাকে, তাই এটি আপনার ফোন থেকে আলাদা করা যায় না। আর তাই সিম হারিয়ে যাওয়ারও ভয় নেই।
✪ কোনো কারণে ফোন হারিয়ে গেলেও অন্য আরেকটি ফোনে ই-সিম খুব সহজেই রিপ্লেস করা যায়।
✪ অপারেটর বা নাম্বার পরিবর্তন করতে হলে বারবার সিম ঢোকানো বা সরানোর ঝামেলা নেই।
✪ একই ফোনে একাধিক ই-সিম ব্যবহার করতে পারবেন।
✪ বিভিন্ন ফোন বিভিন্ন আকারের সিম সমর্থন করে, কিন্তু ই-সিমে কোনো আকারের ঝামেলা নেই।
✪ এটি আপনার ফোনের ব্যাটারিও বাঁচাবে।
✪ ই-সিম পরিবেশবান্ধব।
কীভাবে eSim সক্রিয় বা রূপান্তর করবেন?
ই-সিম সক্রিয় বা একটিভ করার জন্য, গ্রাহকদের ফোনে নেটওয়ার্ক প্রদানকারীর পরিষেবা ইনস্টল করতে হবে।
ই-সিম সক্রিয় করতে, আপনাকে বারকোড স্ক্যান করতে হবে। আসুন আমরা ধাপে ধাপে এর সক্রিয়করণ প্রক্রিয়াটি জেনে নিই।
ধাপ-১: প্রথমে আপনি আপনার নেটওয়ার্ক প্রদানকারী কোম্পানির সাথে যোগাযোগ করে KYC করার পরে, QR কোড পাবেন।
ধাপ-২: QR কোড পাওয়ার পর, আপনার eSim সমর্থিত স্মার্টফোনের সেটিংসে যান।
এখানে মোবাইল ডেটা বা সেলুলার ডেটা অপশনে প্রবেশ করুন। এবং প্ল্যান যোগ করার অপশন নির্বাচন করুন।
ধাপ-৩: এবার কোম্পানির পাঠানো QR কোড স্ক্যান করুন। তাহলে আপনার ই-সিম শীঘ্রই সক্রিয় হয়ে যাবে।
একটি নতুন eSim সংযোগ পেতে, আপনি কোম্পানির সাথে যোগাযোগ করতে পারেন বা তাদের দোকানে যেতে পারেন এবং সেখান থেকে এটি একটিভ করতে পারেন৷
কোম্পানির দোকানে যাওয়ার সময় অবশ্যই আপনার ফোনটি নিয়ে যাবেন যে ফোনটির জন্য আপনি ই-সিম পেতে চান।
এছাড়াও আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র এবং পাসপোর্ট সাইজের ছবি সাথে রাখুন।
কোন কোন ডিভাইসে ই-সিম সাপোর্ট করে?
ই-সিম ফিচারটি প্রথম ২০১৬ সালে একটি 3G সিম হিসাবে Samsung এর Gear S2 ফোনে দেখা গিয়েছিল।
এরপরে Apple Watch Series 3 তেও দেখা গিয়েছিল। আর এরপর এই প্রযুক্তি আইপ্যাড এবং গুগলের স্মার্টফোনেও ব্যবহার করা হয়।
বর্তমানে Apple, Samsung এর সাম্প্রতিক স্মার্টফোন এবং Google এর Pixel সিরিজের অনেক স্মার্টফোন সংযোগের জন্য eSim প্রযুক্তি ব্যবহার করেছে।
ই-সিম পাওয়ার পর আমি কি আমার অপারেটর পরিবর্তন করতে পারবো?
ই-সিম সম্পূর্ণভাবে একটি ফিজিক্যাল সিমের মতো কাজ করে।
এটির ‘রিরাইটেবল’ বৈশিষ্ট্যের কারণে, আপনি এই সিমের অপারেটর পরিবর্তন করতে পারেন খুব সহজেই।
এছাড়াও আপনি সহজেই আপনার নম্বর পরিবর্তন করতে পারবেন।
ই-সিম নিয়ে আরো কোনো কিছু জানার থাকলে তা নিচের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। ধন্যবাদ।