টুথপেস্ট দিয়ে আশ্চর্যজনক ব্যবহারের ১০ চমক!
অভ্যাসগতভাবে আমরা রাতের খাওয়ার পর এবং সকালের নাস্তার পর পরই দাঁত মাজি। তবে কেউ কেউ এর ব্যতিক্রম অনেকেই ঘুম থেকে উঠেই দাঁত মাজা শুরু করেন। যাই হোক, বলছিলাম চিরচেনা টুথপেস্ট প্রসঙ্গে। টুথপেস্ট দাঁতকে করে, উজ্জ্বল করে, ডিওডোরাইজ করে, দাগ দূর করে, এবং এনামেল পুনরুদ্ধার করে এবং সুরক্ষা দেয়।
তবে টুথপেস্টের উপরিউক্ত কাজ সাধন করা ছাড়াও অনেকগুলো জিনিসে কাজে দেয়। যা সত্যিই আশ্চর্যজনক। আর তা কি?
১. বিষাক্ত পোকার কামড়, ঘা এবং ফোসকা থেকে জ্বালা উপশম করতে টুথপেস্টের জুড়ি নেই। ছোট্ট শিশুরা তাদের নরম ত্বকের জ্বালায় সারাক্ষণ কাঁদতে থাকে আবার বড়রা তো রিতিমতো অসহনীয় হয়ে পড়েন, এছাড়া বিষাক্ত পোকার কামড়ে প্রায়শই ত্বকে চুলকায়। এ অসহনীয় চুলকানি, জ্বালাতন ভাব থেকে রক্ষা পেতে এবং দুর্ঘটনায় কোথাও দেহের কোনো অংশের ফোলাভাব কমাতে ঐ স্থানটিতে একটি ফোঁটা টুথপেস্ট প্রয়োগ করুন। এতে টুথপেস্ট ব্যথা নিরাময়সহ ঘা গুলো শুকিয়ে দেয়, ফলে ক্ষতটি আরও দ্রুত নিরাময় করে। রাতারাতি ভালো ফলাফল পেতে এর ব্যবহার বেশ কার্যকর।
২. আগুনে বা প্রচন্ড তাপে দেহে পোড়া অংশে জ্বালাতনভাব দূর করে প্রশান্তি লাভের জন্য টুথপেস্ট অনন্য। ছোট পোড়া স্থানের জন্য একমাত্র টুথপেস্ট অস্থায়ী শীতলতা দান করতে কাজ করে। এটি দেহের পোড়া অংশে দ্রুত আক্রান্ত স্থানে ভালো করে প্রয়োগ করুন। এটি অস্থায়ীভাবে জ্বালাতন মুক্ত করে এবং ক্ষতটি জীবাণু থেকে রক্ষা করে।
৩. মুখে বা ত্বকে অবাঞ্চিত দাগ দূরীভূত করতে টুথপেস্ট ব্যবহার করা যায়। এ সমস্যা হতে ত্বকের দাগকে দ্রুত নিরাময় করতে চান? তাহলে বিছানায় যাওয়যার আগে রাতে আক্রান্ত স্থানে টুথপেস্টের একটি ক্ষুদ্র বিন্দু প্রয়োগ করুন। তারপর সকালে এটি ধুয়ে ফেলুন।
৪. আপনার নখ পরিষ্কার করতে টুথপেস্টকে সঙ্গি হিসেবে নিতে পারেন। আমাদের দাঁতগুলি এনামেল দিয়ে তৈরি এবং টুথপেস্টগুলি তাদের জন্য ভাল। তাই এটি যুক্তিযুক্ত যে দাঁত পেস্টগুলোও আমাদের নখগুলোর জন্য ভাল। ক্লিনার, ঝলকানো এবং শক্তিশালী নখের জন্য, টুথব্রাশ এবং টুথপেস্ট দিয়ে নখের নীচে এবং নখগুলির উপরে কেবল স্ক্রাব করুন। আর দেখুন জাদু।
৫. আর চুলের জেল কেনা লাগবে না! কি অবাক হলেন, জেল তৈরির জন্য টুথপেস্টে একই জলীয় দ্রবণের পলিমার থাকে যা চুলের জেল তৈরিতে সহায়তা করে। আপনি যদি চুলের পরিপাটি নিয়ে চিন্তিত হন, তাহলে টুথপেস্ট ব্যবহার করে সেই স্টাইল ধরে ররাখতে পারেন করতে। আপনি যদি নিয়মিত চুলের জেল থেকে দূরে থাকেন তবে জেল টুথপেস্টকে আপনার পণ্য হিসাবে ব্যবহার করুন।
৬. দুর্গন্ধযুক্ত গন্ধ দূরে সরিয়ে ফেলুন কেবল টুথপেস্ট ব্যবহারে। রসুন, মাছ, পেঁয়াজ এবং অন্যান্য খাবারগুলো আমাদের হাতের ত্বকের কোষগুলোকে নষ্ট করতে পারে। টুথপেস্ট দিয়ে হাত ও আঙুলের স্ক্রাব করা দুর্গন্ধযুক্ত সমস্ত গন্ধকে সরিয়ে দিতে পারেন।
৭. পোশাকের দাগ সরাতে টুথপেস্ট দারুন কার্যকরি। আমাদের পোশাকে নানা অসাবধানতায় দাগ পড়ে যায়। আর সেই দাগ পোশাকের ঔজ্জ্বল্যতা নিমিশেই নষ্ট করে দেয়। আর এসব দূরীকরণের জন্য সরাসরি দাগের উপরে টুথপেস্ট লাগান এবং স্পটটি চলে যাওয়া অবধি ঝাঁকুনি দিন, তারপরে যথারীতি ধুয়ে ফেলুন। (দ্রষ্টব্য: যে রঙগুলোতে একটি সাদা রঙের টুথপেস্ট ব্যবহার করা কখনও কখনও ফ্যাব্রিককে ব্লিচ করতে পারে)। কার্পেটের দাগের জন্য, টুথপেস্টটি দাগের জন্য প্রয়োগ করুন এবং এটি একটি ক্ষয়কারী ব্রাশ দিয়ে স্ক্রাব করুন, তারপরে তাৎক্ষণিকভাবে ধুঁয়ে ফেলুন।
৮. জুতো অপরিষ্কার হলে সহজেই টুথপেস্ট দিয়ে পরিষ্কার করা সম্ভব। কার্পেটের দাগের মতো, টুথপেস্টটি সরাসরি নোংরা বা স্কার্ফ যুক্ত জায়গায় প্রয়োগ করুন। তারপরে ব্রাশ দিয়ে স্ক্রাব করুন এবং পরিষ্কার কাপড় দিয়ে মুছুন। আর দেখুন নিমিষেই সব পরিষ্কার।
৯. বাচ্চারা অযতাই দেয়ালে নানান ধরনের ছবি আঁকতে আঁকতে তা নষ্ট করে দেয়। তবে চিন্তা কিসের? সহজেই পারেন তা দূর করতে। এর জন্য টুথপেস্ট সহ একটি স্যাঁতসেঁতে কাপড়টি চিহ্নিত করা দেয়ালে আলতো করে ঘষুন এবং ক্রেওলা চিহ্নগুলো অদৃশ্য হয়ে যাবে।
১০. রূপোর গহনা এবং অন্যান্য রূপোর টুকরো ঝলমলে করে নিন সহজেই। আর তা করতে গহনাগুলোতে টুথপেস্ট ঘষুন এবং সারা রাত ভিজিয়ে রাখুন। সকালে নরম কাপড় দিয়ে পরিষ্কার করুন। টুথব্রাশ, টুথপেস্ট এবং সামান্য পানি ব্যবহার করে হীরাগুলিকে একটি হালকা স্ক্রাব দিয়ে উজ্জ্বল করুন। আর ব্যবহৃত টুথপেস্টের সমস্ত চিহ্নগুলো সরাতে ভালভাবে ধুঁয়ে ফেলুন। মুক্তোতে এই পদ্ধতিটি ব্যবহার করবেন না কারণ এটি উপকারের বদলে আরও ক্ষতির কারণ হবে।
সংকলনে: মো. আজিজুর রহমান।