মৌলভীবাজারে ৭০ বছরের বৃদ্ধা মাকে ছেলেরা না খাওয়ালেও আক্ষেপ নেই, তবুও তাদের জন্য দোয়া করেন তিনি!

মৌলভীবাজারে ৭০ বছরের বৃদ্ধা মাকে ছেলেরা না খাওয়ালেও আক্ষেপ নেই, তবুও তাদের জন্য দোয়া করেন তিনি!
ডেস্ক রিপোর্ট: ছেলেমেয়েরা বাবার বাড়ি বিক্রি করে যার যার টাকা নিয়ে গেছে। ছেলেরা আর খবর নেয় না। মেয়েদের বাড়িতে থাকেন। বয়স্ক ভাতার টাকা আর ভিক্ষা করে যা পান তা দিয়ে চলে যায় সত্তর (৭০) বছরের বৃদ্ধা মা আরিজা বিবির দিন।

মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার সাগরনাল ইউনিয়নের দক্ষিণ সাগরনাল (গাঙ্গেরপুল) গ্রামের বাসিন্দা আরিজা বিবির স্বামী আরসাদ আলী প্রায় ২৫ বছর পূর্বে মারা যান। তার ২ ছেলে ও ৪ মেয়ে।

সব মেয়েদের বিয়ে দিয়েছেন। ছেলেরাও সবাই বিয়ে করেছে। আরসাদ আলীর ৩০ শতাংশ জমির ওপর বাড়ি ছিল। ছেলেমেয়েরা বাড়িটি বিক্রি করে টাকা নিয়ে নেয়। ছেলেরা বউ নিয়ে অন্যত্র চলে যায়। মেয়েরাও স্বামীর বাড়ি। অসহায় হয়ে পড়েন বৃদ্ধা আরিজা বিবি।

পর্যায়ক্রমে মেয়েদের বাড়িতে আশ্রয় নিলেও তাদের পরিবারে নেই সচ্ছলতা। নিজের ভরণপোষণের জন্য এই বয়সেও নিজ গ্রামেই তিনি ভিক্ষা করেন।

যে ছেলেদের গর্ভে ধারণ, জন্মদান, লালনপালন, বিয়ে সব কিছু করালেন সেই ছেলেরা এখন বউ-সন্তান নিয়ে সংসার করলেও তাদের সংসারে বুড়ি মায়ের জন্য এক মুঠো অন্ন জুটেনি বা একটু মাথা গোঁজার ঠাঁই হয়নি। মাকে ওরা দেখতেও আসে না।

জীবনের এই পড়ন্ত বেলায় বিভিন্ন প্রতিকূলতায় সরকার প্রদত্ত বয়স্ক ভাতাই আরিজা বিবির শেষ অবলম্বন।

ছেলেদের প্রতি তার প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে আরিজা বিবি বলেন, ছেলেরা না খাওয়ালে, খোঁজখবর না করলেও আমি তাদের অভিশাপ দেই না। দোয়া করি আল্লাহ তাদের বড় করুক।

একদিকে, ২০১৮ সালের ৭ জুলাই বাংলাদেশে প্রথম মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলাকে 'ভিক্ষুকমুক্ত' উপজেলা ঘোষণা করা হয়।

অপরদিকে, বৃদ্ধ মা-বাবার যত্ন নিতে কঠোর আইনও রয়েছে। তারপরও ৭০ বছর বয়সে আরিজাকে বাড়ি বাড়ি ঘুরে ভিক্ষা করতে হয়, আশ্রিত হতে হয় মেয়েদের বাড়িতে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন