Youtube community guidelines bangla || ইউটিউব কমিউনিটি গাইডলাইন ও ইউটিউব কপিরাইট নিয়ম ২০২০।

আপনি যদি ইউটিউব ভিডিও মার্কেটিং করে ইউটিউব থেকে আয় করতে চান তাহলে ইউটিউব কমিউনিটি গাইডলাইনস (Youtube community guidelines bangla) সম্পর্কে জানা আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ইউটিউব কমিউনিটি গাইডলাইন ও ইউটিউব কপিরাইট নিয়ম (Youtube Copyright Rules Bangla) না মেনে ভিডিও বানালে ইউটিউব মনিটাইজেশন ২০২০ (Youtube Monitaization 2020) পাওয়া সম্ভব না।

ইউটিউব থেকে টাকা আয় করতে ইউটিউবের নিয়ম কানুন মাথায় রেখেই ভিডিও বানাতে হবে। ইউটিউব কমিউনিটি গাইডলাইনস না মেনে ভিডিও বানালে আপনার ইউটিউব চ্যানেলটি যেকোনো সময় হারাতে হতেপারে।

Youtube community guidelines bangla, ইউটিউব চ্যানেলের সুন্দর নাম, ইউটিউব মনিটাইজেশন ২০২০, ইউটিউব কপিরাইট নিয়ম, ইউটিউব থেকে আয়, youtube copyright, Youtube community guidelines, Youtube community guidelines strike, ইউটিউব কমিউনিটি গাইডলাইন, বাংলাদেশ থেকে ইউটিউব মনিটাইজেশন, ইউটিউব কপিরাইট আইন,  ইউটিউব চলছে না কেন, ইউটিউব থেকে কত আয় করা যায়, ইউটিউব সম্পর্কে,  কপিরাইট কিভাবে করতে হয়, ইউটিউব কপিরাইট কি, ইউটিউব ভিডিও কপিরাইট, ইউটিউবের নিয়ম কানুন। ইউটিউব মনিটাইজেশন কি, ইউটিউব চ্যানেল মনিটাইজেশন, ইউটিউব থেকে টাকা আয়, ইউটিউব থেকে টাকা আয় করার উপায়, ইউটিউব থেকে আয় করার পদ্ধতি, youtube copyright rules bangla, youtube copyright rules 2020
Youtube community guidelines bangla.


ইউটিউব কমিউনিটি গাইডলাইন কি?

ইউটিউব কমিউনিটি গাইডলাইন কি? (What Is Youtube Community Guideline?) তা জানতে হলে, আসুন প্রথমে জেনে নেওয়া যাক 'Community' ও 'Guidelines' শব্দ দুটির অর্থ। 'Community' শব্দের অর্থ সম্প্রদায় এবং 'Guidelines' শব্দের অর্থ 'নির্দেশাবলী' বা 'নীতিমালা'।

ইউটিউব হচ্ছে একটা কমিউনিটি। যেখানে রয়েছে ইউটিউব অংশীদার (Youtube Partner) যারা ভিডিও আপলোড করে এবং ইউটিউব থেকে টাকা আয় করে, কিছু আছে বিজ্ঞাপনদাতা (Advertiser) যারা ইউটিউবে তাদের কোম্পানীর প্রচারের জন্য বিজ্ঞাপন দিয়ে থাকে এবং দর্শক (Viewers), যারা বিনোদনের জন্য কিংবা জ্ঞান অর্জনের জন্য শিক্ষামূলক ভিডিও ইউটিউবে দেখে থাকে।

এই ৩ শ্রেণীর সদস্য নিয়েই গড়ে উঠে ইউটিউব সম্প্রদায় (Youtube Community)। ইউটিউব কমিউনিটি সবার ব্যবহারের জন্য উপযোগী করে তুলতে তাদেরও কিছু নিয়ম নীতি বা নির্দেশনা রয়েছে। যা না মানলে কোনো সময় ইউটিউব চ্যানেলে স্ট্রাইক দিয়ে সতর্ক করে।

আবার কোনো সময় বিনা সতর্কীকরণে চ্যানেল সাসপেন্ড করে দেয় এমনকি অনেক সময় সারা জীবনের জন্যও সাসপেন্ড করে দেয়। আর সেই সকল নিয়ম-নীতি বা নির্দেশনাগুলোকে বলা হয় ইউটিউব কমিউনিটি গাইডলাইনস (Youtube Community Guidelines)।

আর ইউটিউব কপিরাইট আইন (Youtube Copyright Rules 2020) হচ্ছে ইউটিউব কমিউনিটি গাইডলাইনেরই অংশ। বাংলাদেশ থেকে ইউটিউব মনিটাইজেশন পেতেও আপনাকে একই বিষয়গুলো মাথায় রাখতে হবে।

ইউটিউবে মূলত যেসকল কারনে কমিউনিটি গাইডলাইন স্ট্রাইক বা চ্যানেল সাসপেন্ড করে থাকে আজতে তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
চলুন শুরু করিঃ-

০১ঃ নগ্নতা বা যৌন সামগ্রী (Nudity Or Sexual Content)

ইউটিউব মূলত পর্নোগ্রাফি বা যৌনতাপূর্ণ ভিডিও কন্টেন্টের জন্য নয়। আপনার ভিডিওতে যদি পর্নোগ্রাফি বা অশ্লীলতার কিছু থাকে, তাহলে ভিডিওটি আপনার নিজের হলেও সেটি ইউটিউবে আপলোড করতে পারবেন না। আর যদি করেন ইউটিউব ভিডিওটি সরিয়ে ফেলবে বা আপনাকে কমিউনিটি গাইডলাইন স্ট্রাইক দিবে।

তবে ইউটিউব রুলস অনুযায়ী শিক্ষামূলক বিষয়ে আপনি এই ধরনের কিছু কন্টেন্ট আপলোড করতে পারবেন। প্রাথমিক উদ্দেশ্য, শিক্ষাগত তথ্যচিত্র, বৈজ্ঞানিক, বা শৈল্পিক ভিডিওতে নগ্নতা বা অন্যান্য যৌন বিষয়বস্তু অনুমোদিত হতে পারে তবে তা যৌক্তিক হতে হবে।

ইউটিউবে এমন ভিডিও আপলোড করলে তা এইজ রেস্ট্রিকটেড (Age-Restricted) করে রাখতে হয়। আর এইসকল ভিডিওগুলো কেবল মাত্র ১৮ বছর বয়সের উর্ধ্বে ব্যাক্তিরাই দেখতে পারবে। এইজ রেস্ট্রিকটেড করে রাখলে ভিডিওতে কোন প্রকার বিজ্ঞাপন দেখানো হয়না।

০২ঃ হিংস্র বা গ্রাফিক সামগ্রী (Violent Or Graphic Content)

হিংস্র বা গ্রাফিক সামগ্রী বলতে মারা-মারি, কাটা-কাটি, খুন, ধর্ষন, হত্যার দৃশ্য এগুলোকে বুঝায়। অর্থ্যাৎ যেসব দৃশ্যে রক্ত (Blood) সংশ্লিষ্ট বিষয় আছে। যা দেখে মানুষজন কিংবা শিশুরা আতংকিত হতে পারে এমন সব ভিডিও আপনি আপনার ইউটিউব চ্যানেলে কখনোই আপলোড করতে পারবেন না।

আর শুধু মানুষ হত্যা না কোন পশু-পাখির হত্যার ভিডিও'ও ইউটিউবে প্রকাশ করা যাবে না। অর্থাৎ ইউটিউবে এমন কোনো ভিডিও আপলোড করা যাবেনা যেসকল ভিডিওগুলো দেখে মানুষজন ভয় বা অতংকিত হতে পারেন। অনেকের কাছে মনে হতে পারে এইসব দৃশ্য দেখে আবার ভয়ের কি আছে!

কিন্তু একটা কথা মনে রাখতে হবে, ইউটিউব কিন্তু শুধু আপনার জন্য নয়। এটা একটি কমিউনিটি। যেখানে নারী-পুরুষ, শিশু থেকে বৃদ্ধ, সব বয়সের মানুষই ভিডিও দেখে। প্রায় সব ধর্ম, বর্ণ, জাতি বা গোষ্ঠির লোকজনই এই ইউটিউব কমিউনিটিতে আছে।

০৩ঃ ঘৃণাত্মক কন্টেন্ট (Hateful Content)

ঘৃণাত্মক কন্টেন্ট হলো আপনার ভিডিওতে এমন কোনো কিছু থাকা যার দ্বারা কোনো ব্যাক্তি, লিঙ্গ, জাতি, ধর্ম, বর্ণ বা কোন একটি দেশের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ বা ব্যাঙ্গ করা বুঝায়। ইউটিউব কখনো এমন ঘৃণাত্মক কন্টেন্ট আপনাকে আপনার ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড করার অনুমতি দিবেনা।

আর যদি আপলোড করেন তাহলে আপনার চ্যানেলে স্ট্রাইক দেওয়া হবে এমনকি আপনার চ্যানেল সাসপেন্ড পর্যন্ত হতে পারে।

আরো প​ড়ুনঃ

০৪ঃ স্প্যাম, বিভ্রান্তিকর মেটাডেটা এবং স্ক্যাম (Spam, Misleading Metadata, And Scams)

স্প্যাম হলো অনলাইনে একই কাজ বারবার করা, যা সবার কাছে পছন্দ না। যেমনঃ একই লিংক যেখানে সেখানে বার বার শেয়ার করা, বিভিন্ন ভিডিওর কমেন্ট বক্সে একই কমেন্ট বারবার করা যা সবার কাছে অপছন্দের, অন্য চ্যানেলের ভিডিওর কমেন্টে নিজের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করতে বলা ইত্যাদি ইত্যাদি।

অর্থাৎ লক্ষ্যহীন, অযাচিত বা অবাঞ্ছিত, কিংবা পুনরাবৃত্তিমূলক কন্টেন্ট করা যাবেনা৷ অসাধু উপায়ে চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা বাড়ানো যাবেনা। যেমনঃ সাব ফর সাব, কিংবা সাবস্ক্রাইব বাড়াতে অন্য কোনো ওয়েবসাইট বা এপস ব্যবহার করা। যদি এমন কাজ করেন তাহলে তাও স্প্যাম হিসেবে গন্য হবে।

আর মিসলেডিং মেটাডাটা স্প্যামিং হলো অন্যের ভিডিওর টাইটেল (Title), ডেসক্রিপশন (Description) ও ট্যাগ (Tag) হুবুহু কপি করে আপনার ভিডিওতে বসানো। কিংবা ভিডিওর থাম্বনেইল (Thumbnail), টাইটেল, ডেসক্রিপশন, কিংবা কিওয়ার্ড বা ট্যাগসমূহ ভিডিওর সাথে অসামঞ্জস্য হলে। বেশি ভিউ পাওয়ার আশায় অনেকেই এই ভুল করে থাকে।

ডেসক্রিপশনে ভিডিওর ট্যাগগুলো বসিয়ে দিলেও এইটা মিসলেডিং মেটা ডাটা। ট্যাগগুলো আপনি ডেসক্রিপশনে ব্যবহার করতে পারবেন তবে তা বাক্য বা Sentence আকারে করতে হবে। আর স্ক্যাম (Scam) হলো কাউকে লোভ দেখানো বা কাউকে কোনো কিছুর লোভ দিখিয়ে আপনার ভিডিওটি দেখানো।

যেমন: কিছু ভিডিওর থাম্বনেইলে আর টাইটেলে লেখা থাকে কিভাবে আপনি প্রতিদিন ১০০ ডলার করে আয় করবেন, কিভাবে ৫ মিনিটে ৫০ ডলার আয় করবেন, কিংবা এক ক্লিকে এতো টাকা আয় করুন ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু ভিডিওতে দেখা গিয়েছে আসলে এমন কোনো আয় সম্ভব না। আসলে তারা ভিডিওতে বেশি ভিউ পেতে এমন অতিরঞ্জিত কথা লিখে রাখে।

কিংবা এমন আকর্ষণীয় থাম্বনেইল ও টাইটেল ব্যাবহার করে যা নিয়ে আসলে ভিডিওতে কোন আলোচনাই নেই, এগুলোই হলো স্কেম। আর স্প্যাম, বিভ্রান্তিকর মেটাডেটা এবং স্ক্যাম'এর কারনে বেশিরভাগ চ্যানেল সাসপেন্ড হয়ে থাকে।

০৫ঃ ক্ষতিকারক বা বিপজ্জনক কন্টেন্ট (Harmful Or Dangerous Content)

ক্ষতিকর ও বিপদজনক কোন ভিডিও ইউটিউব আপলোডের অনুমোদন করে না। অর্থাৎ এমন কিছু ভিডিও যে ভিডিওগুলো থেকে কোন ব্যক্তি বা সমাজের ক্ষতি হওয়ার সম্ভবনা আছে। বিশেষ করে শিশুদের শারীরিক আঘাত হতে পারে এমন কাজ করতে প্ররোচনা দেয়।

এমন কিছু ভিডিও যা থেকে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড বেড়ে যায়। যেমনঃ কিভাবে বোমা বা গ্রেনেড তৈরী করতে হয়, কিভাবে মাদক তৈরী করতে হয়, যা দেখে কারো ক্ষতি সাধন হতে পারে। অথবা আপনি এমন কোনো আকর্ষনীয় ভিডিও তৈরী করলেন যা দেখে শিশুদের কিংবা বৃদ্ধদের ক্ষতি হওয়ার সম্ভবনা থাকে। এমন কোনো ভিডিও আপনি আপনার ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড করতে পারবেন না।

০৬ঃ কপিরাইট (Copyright Content)

কপিরাইট হচ্ছে অনেক বড় একটি কমিউনিটি গাইডলাইন রুল। ইউটিউবে শুধুমাত্র এমন ভিডিওই আপনি আপলোড করতে পারবেন যেই ভিডিওটি আপনি নিজে তৈরি করেছেন অথবা ব্যবহারের অনুমতি পেয়েছেন৷ আপনার তৈরি করা নয় এমন কোনো ভিডিও আপনি আপলোড করতে পারবেন না।

অর্থাৎ আপনার ভিডিওতে অন্য কারও কপিরাইটযুক্ত কন্টেন্ট তাদের অনুমতি ছাড়া ব্যাবহার করতে পারবেন না। হতে পারে তা মিউজিক, ইমেজ কিংবা ভিডিওর অংশ বিশেষ৷ উদাহরণঃ কোনো বিখ্যাত শিল্পীর গানের অনুষ্ঠান আপনি দর্শক হিসেবে আছেন। এবং উক্ত অনুষ্ঠানের দৃশ্য আপনি আপনার ক্যামেরা বা মোবাইল ফোন দিয়ে ভিডিও করে আপনার ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড করলেন।

যেহেতু ভিডিওটি আপনার ক্যামেরা থেকে ধারন করা আপনার কাছে মনে হতে পারে এটি আপনার নিজস্ব কন্টেন্ট। কিন্তু ইউটিউবের নিয়ম অনুসারে এটি একটি কপিরাইট ভিডিও। অথবা কোনো টিভি অনুষ্ঠান রেকর্ড করে আপনার চ্যানেলে আপলোড করলেন, এটি তাও কপিরাইট। কারন ঐ অনুষ্ঠানের আসল মালিক আপনার না।

০৭ঃ হুমকি (Threats)

আপনার ভিডিওতে যদি কোন ব্যক্তি, গোষ্ঠী কিংবা কোনো সম্প্রদায়কে হুমকি, হয়রানি, ভয় দেখানো, গোপনীয়তায় হস্তক্ষেপ করা, ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশ করা, হিংসাত্মক কাজে উস্কানি দেওয়ার মতো ইত্যাদি বিষয়গুলো থেকে থাকে তাহলে আপনি এমন ভিডিও ইউটিউবে আপলোড করতে পারবেন না।

পরিশেষেঃ ইউটিউব থেকে অনেক টাকা আয় করা সম্ভব। তাই ইউটিউবকে অনেকেই পেশা হিসাবে বেছে নিয়েছে। আপনিও যদি ইউটিউব থেকে টাকা আয় করতে চান তাহলে কঠোর পরিশ্রম, ধৈর্যের বিকল্প নেই আর তার সাথে দরকার ইউটিউব কমিউনিটি গাইডলাইন মেনে কোয়ালিটি সম্পন্ন ভিডিও নির্মান করে যাওয়া।

আর ইউটিউব কমিউনিটি গাইডলাইন সম্পর্কে যদি আর কোনো প্রশ্ন থেকে থাকে তাহলে তা কমেন্টে জানান আমি উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো।
ধন্যবাদ।

Post a Comment

Previous Post Next Post