বিড়াল পালা কি হালাল? বিড়াল সম্পর্কে হাদিস।

 বিড়াল নিয়ে ইসলাম কী বলে?

শায়েখ আহমাদুল্লাহ থেকে শুরু করে মাওলানা তারিক জামিল বা মুফতি মেনক, ইদানীং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রবেশ করলেই দেখা যায় অনেক আলেম বিড়াল নিয়ে ছবি পোস্ট করছে।

বেশ কিছু দিন আগে ভাইরাল হওয়া এক ভিডিওটাও নিশ্চয়ই সবার মনে আছে। যেখানে নামাজরত অবস্থায় এক ইমামের কাধের উপর একটি বিড়াল উঠে যায়। আর ইমামও সেই অবস্থায় তার নামাজ চালিয়ে যায়।

বিড়াল পালা কি হালাল? বিড়াল সম্পর্কে হাদিস।

কিন্তু কখনও কি মনে প্রশ্ন জেগেছে, আলেমরা কেন বিড়াল পালেন বা ইসলামে বিড়াল নিয়ে কী বলা আছে?

বিড়ালের ইতিহাস।

ধারণা করা হয়, আজ থেমে প্রায় বার হাজার বছর আগে প্রথম মানুষ বিড়াল পালা শুরু করে। বর্তমানে যত বিড়াল দেখা যায় তা মূলত মধ্যপ্রাচ্যের বনবিড়ালের বংশধর।

প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতায়ও বিড়াল পালন করার প্রমাণ পাওয়া যায়। মূলত কৃষকরা ইদুরের হাত থেকে তাদের ফসল বাঁচাতে বিড়াল পালা শুরু করে।

একই ভাবে ইদুরের হাত থেকে বাঁচতে জাহাজের নাবিকরাও বিড়াল নিয়ে ভ্রমণ করতেন। ফলে পুরো বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে সহজেই ছড়িয়ে পরে এই প্রাণীটি।

বিড়াল নিয়ে ইসলাম কী বলে?

ইসলাম ধর্মে বিড়ালের একটি বিশেষ স্থান রয়েছে। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বিড়ালকে পবিত্র প্রাণী বলে ঘোষণা করেছেন। আবু হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন,

"বিড়াল নামাজের বিঘ্ন ঘটায় না। কারণ এরা ঘরের জন্য উপকারী।"
[সুনাম ইবনে মাজাহ ৩৬৯]


কোনো বর্ণনায় এসেছে মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর ওযুর পাত্র হতে যখন কোনো বিড়াল পানি খেত তিনি সেই পানি দিয়েই ওযু করতেন।

মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর এক সাহাবী ছিলেন যার নাম আব্দুর রহমান (রাযিয়াল্লাহু আনহু)। তিনি বিড়াল পছন্দ করতেন আর তার সাথে সব সময় বিড়াল থাকতো।

একদিন তিনি তার জামার ভেতর এক বিড়াল ছানা লুকিয়ে মসজিদে প্রবেশ করলেন। কিছুক্ষণ পর সেই বিড়াল তার জামা থেকে বের হয়ে মসজিদে ছুটাছুটি শুরু করলো। মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এ ঘটনা দেখে তাকে "আবু হুরায়রা" বলে ডাকলেন। যার অর্থ বিড়ালের পিতা।

আব্দুর রহমান (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর এ নামটা এতটাই পছন্দ হয় যে, তিনি তার নিজের নাম আবু হুরায়রা রাখলেন। তিনিই হচ্ছেন সেই বিখ্যাত সাহাবী আবু হুরায়রা (রাযিয়াল্লাহু আনহু), যিনি সবচেয়ে বেশি হাদিস বর্ণনা করেছেন।

মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এমন একজন মহিলার কথাও বলেন, যে জাহান্নামে যাবে। কারণ সে একটি বিড়ালকে বেধে রাখে সেটিকে খাবার দেয়নি এমনকি ছেড়েও দেয়নি, ফলে বিড়ালটি ঐ অবস্থায়ই মারা যায়।

এছাড়াও মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কোনো অর্থের বিনিময়ে বিড়াল কেনা-বেচা একদম নিষিদ্ধ করে দিয়েছেন। ইসলামের দৃষ্টিতে বিড়াল একটি পবিত্র প্রাণী, কারণ বিড়াল সব সময় পবিত্র থাকতে পছন্দ করে।

এরা নিজেরাই নিজেদের পরিষ্কার রাখে। শুধু তাই না, এরা যেখানে সেখানে নয় বরং নির্দিষ্ট স্থানে মলমূত্র ত্যাগ করে এবং তা ঢেকে দেয়। ফলে দূর্গঘন্ধ বা জীবাণু ছড়ানোর ভয় থাকে না। এ কারণেই দেখা যায় অনেক আলেমরা বিড়াল পালেন। এমনকি মসজিদে নববীতেও মানুষের পাশাপাশি বিড়ালের বিচরণ রয়েছে। 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন